শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের সিদ্ধান্তে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, এই মামলা প্রত্যাহার না করলে খারিজ করে দেওয়া হবে। এরপরেই তড়িঘড়ি মামলাকারীরা সুপ্রিম কোর্ট থেকে মামলা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
২০২২ সালের টেটের ভুল প্রশ্ন নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য। বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। ২০১৭ এবং ২০২২ সালের প্রাথমিকের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন নিয়ে এই মামলা দায়ের হয়। মামলায় ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষায় ২৩টি ও ২০২২ সালের টেটেও ২৪ প্রশ্ন ভুল ছিল বলে অভিযোগ করা হয়। শুনানির পর আদালত টেটের সেই প্রশ্নগুলি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয়। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন ২০১৭ সালের টেটের প্রশ্নপত্রগুলি খতিয়ে দেখবে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। আর ২০২২ সালের টেটের প্রশ্নগুলি খতিয়ে দেখবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
এরপর সেই মামলাটি চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য। ফলে সিঙ্গল বেঞ্চের সেই মামলাটি ডিভিশন বেঞ্চে যায়। সেখানে এই সিদ্ধান্তের কিছু পরিবর্তন করা হয়। বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৩ আগস্ট একটি বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। কলকাতা, যাদবপুর ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত হবে এই কমিটি। এই কমিটির কাজ হবে দুটি টেটের ভুল প্রশ্নের অভিযোগ খতিয়ে দেখা। কমিটিতে বিষয় ভিত্তিক বিশেষজ্ঞও রাখা হবে বলে জানিয়ে দেয় হাইকোর্ট। খতিয়ে দেখা হবে ঠিক কতগুলি প্রশ্ন ভুল রয়েছে।
কিন্তু হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে ফের চ্যালেঞ্জ করে। নুরজিনা খাতুন সহ ২০২২ সালের টেটের কয়েকজন পরীক্ষার্থী হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান। দেশের শীর্ষ আদালতে মামলাকারীদের আবেদন ছিল, কমিটিতে বিশ্বভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য থাকা নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে এই কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান। শুক্রবার সেই মামলায় আবেদনকারীদের দাবি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, হাই কোর্টের রায়ই বহাল থাকবে। রায়ে এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না।
হাই কোর্টের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান নুরজিনা খাতুন-সহ প্রাথমিকের ২০২২ টেটের কয়েক জন পরীক্ষার্থী। শীর্ষ আদালতে তাঁদের আবেদন, বাকি দুই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু ওই কমিটি থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বাদ দেওয়া হোক। শুক্রবার ওই মামলাটিরই শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। শীর্ষ আদালত জানায়, হাই কোর্টের রায়ই বহাল থাকবে। ওই রায়ে এখনই কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না।