অন্য রাজ্যের ওপর নির্ভরশীলতা নয়, পর্যাপ্ত আলু চাষে ৫০ লক্ষ বীজ উৎপাদন করবে রাজ্য

নিজস্ব চিত্র

রাজ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী আলু বীজ উৎপাদনে আর অন্য রাজ্যের ওপর নির্ভরশীলতা নয়। এবার থেকে বাংলাতেই উৎপাদন করা হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু বীজ। আগামী বছর থেকেই রাজ্যে উৎপাদন করা হবে ৫০ লক্ষ আলু বীজ। এভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে আলু উৎপাদনে স্বনির্ভরশীল হবে রাজ্য। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় রাজ্যের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় কৃষি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টের ওপর আলোচনার সময় এক প্রশ্নোত্তর পর্বে একথা জানিয়েছেন শোভনবাবু।

প্রসঙ্গত আলু উৎপাদনে বাংলা স্বনির্ভরশীল হলেও এখনও আলুর বীজের জন্য পাঞ্জাবের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। এই পরনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে এসে রাজ্যেই পর্যাপ্ত আলু বীজ উৎপাদন করে নজির গড়তে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে প্রয়োজনের তুলনায় প্রতি বছর অনেক বেশি করে আলু উৎপাদন করে তার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়।

বৃহস্পতিবার বিধানসভার অধিবেশনে এক বিজেপি বিধায়ক রাজ্যে আলু বীজ উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেন কৃষিমন্ত্রীকে। সেই প্রশ্নের উত্তরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা সর্তকভাবে কৃত্রিম বীজ তৈরি করছি। সামনের বছর ৫০ লক্ষ আলু বীজ আমরা উৎপাদন করব।’ তিনি দাবি করেন, ২০৩০ সালের মধ্যে আমাদের আর পাঞ্জাবের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না। তখন আমরা নিজেরাই আলু বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরশীল হয়ে উঠব।


উল্লেখ্য, চলতি বছরে লাগামছাড়া আলুর মূল্য বৃদ্ধিতে বড় ধরনের ছ্যাঁকা খেতে হচ্ছে রাজ্যবাসীকে। দ্রুত পকেট ফাঁকা হচ্ছে গরিব ও মধ্যবিত্তের। আর সেই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার পদক্ষেপ করতে হয়েছে। দফায় দফায় টাস্ক ফোর্স বাজারে নেমে পরিস্থিতি সামলাবার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে রাজ্যের উৎপাদিত আলু যাচ্ছে অন্য রাজ্যে, এমনকি প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশেও। অথচ রাজ্য সরকার চাষিদের আর্থিক সুরক্ষায় প্রচুর টাকা কৃষি বিমার পিছনে খরচ করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি আলুর মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। প্রশানিক কর্তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি, আলু ব্যবসায়ীদেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে আলু ও পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দ্রুত টাস্ক ফোর্সের মিটিং ডাকা এবং অবিলম্বে সীমান্ত সিল করার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে নবান্ন থেকে একটি সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন,’বাংলায় আলুর দাম বাড়িয়ে অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে মুনাফা লুটবে, আর আমি ইনসিওরেন্সের ব্যবস্থা করব, দুটো জিনিস একসঙ্গে চলতে পারে না। এই জিনিস আমি বরদাস্ত করব না।’