বীরভূমের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার বলি ৬ জন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও ১ জন। এই ৬ পরিবার পিছু আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, মৃতদের পরিবার পিছু ৩২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করা হবে এবং পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। যে সংস্থার কয়লাখনি ছিল সেই সংস্থার তরফে আইন মোতাবেক পরিবারপিছু ৩০ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং সরকারের তরফে পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে ৬ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন , মোট ৯ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। চিকিৎসাধীন ৩ জনের মধ্যে ১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রসঙ্গত, এই কয়লাখনি মূলত ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কয়লাখনি। শারদ উৎসবের প্রাক্কালে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন মুখ্যসচিব।
ঝাড়খন্ড-বাংলা সীমান্ত এলাকার খয়রাশোলে গঙ্গারামচক কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।সেই সময়ে ভিতরে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন, তা কারোর খেয়াল ছিল না। এই বিস্ফোরণের জেরে চাপা পড়ে যান শ্রমিকরা। প্রথমে ৫ জনের দেহ উদ্ধার হয়। পরে আরও দুজনকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
কয়লা উত্তোলনের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় কেন এই গাফিলতির ঘটনা ঘটল, এর দায় কার এসব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই কয়লাখনি মূলত ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কয়লাখনি। তাই সরকারি এই কয়লাখনিতে কাদের গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা নিয়ে বীরভূম জেলা প্রশাসনকে অবিলম্বে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কোথাও হয় রাজ্যের মুখ্য সচিবের। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে মনোজ পন্থকে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় জানিয়েছেন জেলাশাসক। বীরভূমের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফরেনসিক দলকে খবর দেওয়া হয়েছে, তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করবে।
এদিকে এই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত দাবি করেছেন দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা। তাঁর কথায়, ‘খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রশাসন দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। সত্য উদ্ঘাটনের জন্য আমরা এই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত দাবি করছি।’