কলকাতা যাওয়ার জন্য সরাসরি ট্রেন বা বাস পরিষেবার কোনো যোগাযোগ নেই। তাই নিত্যদিন দুর্ভোগে পড়েন মাণিকপাড়া এলাকার মানুষজনেরা। এমনকি অন্যান্য বাসগুলিও মাণিকপাড়াকে এড়িয়ে জাতীয় সড়ক দিয়ে চলে যায়। যার ফলে বাস পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকার বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজ্যের বনদপ্তরের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে সামনে পেয়ে বাস পরিষেবা নিয়ে দাবি জানান বাসিন্দারা। ওই দিন সন্ধ্যায় মাণিকপাড়া এলাকায় কালীপূজোর উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন রাজ্যের বনদপ্তরের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। সেখানে বাস পরিষেবা নিয়ে তাঁদের দাবিপত্র তুলে দেন মন্ত্রীর হাতে।
তাঁদের দাবি, ঝাড়্গ্রাম, গোপীবল্লভপুর, বান্দোয়ান থেকে ছেড়ে আসা কলকাতাগামী সরকারি বাসগুলিকে মাণিকপাড়া বিবেকানন্দ বাসস্ট্যান্ড হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। আমদাই থেকে ঝাড়্গ্রাম যাওয়ার বাস পরিষেবা চালু করতে হবে। কারণ আমদাই থেকে ঝাড়্গ্রামের দুরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। সেখানে সরাসরি কোনো বাস যোগাযোগ নেই। সরকারি বা বেসরকারি বাসের নতুন রুট চালু হলে তা অবশ্যই মাণিকপাড়া হয়ে চালানো ব্যবস্থা করতে হবে।
মেদিনীপুর, ঝাড়্গ্রাম, গোপীবল্লভপুরের অনেক বাস মাণিকপাড়া হয়ে যাওয়ার রুট থাকলেও তারা অমান্য করে জাতীয় সড়ক দিয়ে চলে যায়। তাই তাদের দাবি সেই সমস্ত গুলি যাতে মাণিকপাড়া হয়ে যায় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহ বেশ কয়েকটি দাবি নিয়ে জানান বাসিন্দারা। ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়া, সরডিহা,চুবকা দুধকুন্ডি এই চারটি অঞ্চলের মানুষ জন বাস পরিষেবা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ। তাঁদের অভিযোগ বাসগুলি জাতীয় সড়ক হয়ে চলে যায়। ফলে ওই সব এলাকার মানুষ সমস্যায় পড়েন। তাই বাসগুলি যাতে ভায়া মানিকপাড়া হয়ে যায় তার জন্য সাম্প্রতিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ই-মেল করে তাঁদের দাবি জানিয়েছেন। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ মাণিকাপাড়া এলাকার সর্ডিহাতে রেল স্টেশন থাকলেও সেখানে কোনো এক্সপ্রেস ট্রেন থামেনি।
জানা গিয়েছে, ওই স্টেশনে দীর্ঘ আন্দোলনের পর ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সর্ডিহা স্টেশনে টাটা হাওড়া স্টিল এক্সপ্রেস স্টপেজ দেওয়া শুরু করেছিল। বহু আন্দোলনের পর এলাকার মানুষেদের আশাপূরণ হয়েছিল। কিন্তু করোনার সময়কালে ২০২১ সালে সর্ডিহাতে স্টিলের স্টপেজ তুলে দেওয়া হয়। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে স্থানীয় মানুষ রেললাইন অবরোধ করলে আবারও স্টপেজ দেওয়া চালু হয়। কিন্তু পরে আবার ওই বছরের নভেম্বর মাস থেকে স্টিলের স্টপেজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। সর্ডিহা অঞ্চলের মানুষ জনের লাইফ লাইন হল এই স্টিল এক্সপ্রেস। এলাকার মানুষ চিকিৎসা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে
কলকাতা,খড়্গপুর, মেদিনীপুর যাওয়ার জন্য স্টিলের উপর নির্ভর করেন। এই বিষয়ে রাজ্য বনদপ্তরের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন ” এর আগেও মানিকপাড়া এলাকার বাসিন্দারা পরিবহন সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে বলেছিলেন। তখন জেলা শাসকের সঙ্গে কথা বলে একটা বাসের ব্যবস্থা করেছিলাম। তাঁরা আমাকে আবারও বলেছেন। জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে আরও কয়েকটা বাস যাতে সকালের দিকে চালানো যায় সেটার ব্যবস্থা করব। আর ট্রেনের বিষয়টি নিয়েও কথা বলবো।’