আরজি কর কাণ্ডে এখনও রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের রেশ চলছে। তারই মধ্যে অভীক দে-র বিরুদ্ধে মৃতদেহ পাচারের মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে নতুন করে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে। মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগ থেকে এই দেহ পাচারে অভীক দে-র বিরুদ্ধেই অভিযোগের তির। বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস এর পক্ষ থেকে এই দাবি তোলার পর থেমে নেই মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। এব্যাপারে ওই বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ। সব নিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার জুনিয়র ডাক্তারদের একাংশ।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে দূর্নীতি চলছিল। কিন্তু যে কারণেই হোক সেই দুর্নীতি নিয়ে কোন পক্ষই সরব হয়নি। আরজি কর কাণ্ডের পর জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি আন্দোলনের মাঝে এই মেডিক্যাল কলেজেও উঠে আসে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। এবার তাঁর সঙ্গে যুক্ত হল অ্যানাটমি বিভাগ থেকে দেহ পাচারের অভিযোগ।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা এ ব্যাপারে কাঠগড়ায় তুলেছে অভীক দে-র মতো বর্ধমান লবির প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। রাতারাতি এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কিভাবে দেহ পাচার হয়েছে,কাদের কাছে দেহ গেছে এসব তথ্য জানতে এর মধ্যে লিখিত দাবি তোলা হয়। শুধু তদন্ত নয়, কারা কারা এই ঘটনায় জড়িত, এতদিন কেন পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি, সে বিষয়গুলোকে প্রকাশ্যে আনার দাবিতে এবার সোচ্চার ভূমিকায় আন্দোলনকারীরা।
জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি ও আন্দোলনের মাঝে অভীক দে-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এলে তাঁদের মেডিক্যাল কলেজে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ছাত্রীরা পৃথকভাবে তাঁদের সম্মানহানির অভিযোগ তুলেছে। সেই ঘটনারও বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু সব অভিযোগ ছাপিয়ে গেছে অ্যানাটমি বিভাগের দেহ পাচারের ঘটনা।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস এর যুগ্ম সম্পাদক সুবর্ণ গোস্বামী এ ব্যাপারে সরাসরি অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন, অভীক দে সহ অন্যান্যরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে দেহ পাচারে যুক্ত। আর এর জন্য কর্তৃপক্ষ সব জেনেও নীরব। আন্দোলনকারী ডাক্তাররা ছাড়াও চিকিৎসক সংগঠন সার্ভিস ডক্টর ফোরামও এ ব্যাপারে অভিযোগ এনেছে। সংগঠনের সম্পাদক সজল বিশ্বাস সিন্ডিকেটের কথা তুলে ধরেন।
সূত্রের খবর, অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকটি দেহ এক সময়ে পাচার করে উত্তরাখণ্ডে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হলে তা পুলিশের তৎপরতায় ঠেকানো যায়। এ সব অভিযোগ নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস এর সদস্যরা সরব হওয়ার পর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় অ্যানাটমি বিভাগের কাছে যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠান। এর পাশাপাশি ওই বিভাগে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়।