আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের-ঘটনায় রবিবারই পুলিশ প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়েছে। সোমবার এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন শুনে প্রথম মুখ খুললেন মমতা।
বললেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে একটু কটু কথা বলেছে। পুলিশ তাকে অ্যারেস্ট করেছে।
আমাদের এখানে পুলিশ অ্যাকশান নেয়। আর বিশ্বভারতীর উপাচার্য যা করেছেন তাতে কি উনি গ্রেফতার হয়েছেন?
সোমবার নবান্নে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গে প্রশ্নে ক্ষুব্ধই হন মমতা। বিরক্তি প্রকাশ করে। বলেন, এটা কি খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে?
আলিয়ার একটা অংশের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনো করে। তারা সবাই ভালো। তবে কয়েকজন আছে, তাদের মনে ক্ষোভ রয়েছে। পুলিশ তো ব্যবস্থা নিয়েছে।
তবে বিরোধীদের বক্তব্য, সঙ্গে সঙ্গে নয়, আটচল্লিশ ঘন্টা পরে এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের নেতাদের মদতে টেকনো সিটি থানার পুলিশকে কার্যত নিস্ক্রিয় করে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছিল তৃণমবল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন ইউনিট প্রেসিডেন্ট গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল।
সেই ভিডিও ক্লিপ সামনে আসার পরে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। গ্রেফতার করা হয়েছে গিয়াসুদ্দিনকে।
এই আলিয়ার প্রসঙ্গের সূত্র ধরে বিশ্বভারতীর প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বভারতীতে যা হচ্ছে দেখুন গিয়ে। নাম না করে উপাচার্য প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ওখানে যা করেছেন ভদ্রলোক।
আমি অবশ্য ওঁকে ভদ্রলোকই বলব। কারণ আমার মুখ থেকে খারাপ কথা বের করব না।
প্রসঙ্গত আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্যের ঘরে ঢুকে তাঁকে চড় মারার হুমকি দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের ছাত্রনেতা গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাবি, তিনি আগে ছিলেন সংগঠনে। এখন কোনও সদস্য নন।
কিন্তু ওই গিয়াসুদ্দিনের উপাচার্যের ঘরে ঢুকে গালিগালাজ, মারধরের ঘটনার ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পরে শিক্ষামহলে শোরগোল পড়ে যায়।
সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। তারপরই গিয়াসুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এহেন গিয়াসুদ্দিনের দুর্ব্যবহারের ঘটনাকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘একটু খারাপ’ মন্তব্যের সমালোচনা করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, রায়গঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষকে যখন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলেরা গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়েছিল, তখনও মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ছোট ছোট ছেলেদের দুষ্টুমি।
গিয়াসুদ্দিন নামে একজন সমাজবিরোধী, যার গায়ে তৃণমূলের তকমা ছিল, তার কথাকেও ‘একটু কটু’ বলছেন। ওঁর মদতেই লুম্পেনরা আস্কারা পাচ্ছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সব বিরোধীদের বিধে বলেছেন বিজেপি আপনারা বোকা, সিপিএম আপানদের দেয় ধোঁকা আর কংগ্রেস বিজেপি সিপিএম-এর পোকা।
যে কোনও ঘটনায় রাজনৈতিক রঙ লাগানোস ভুয়ো ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগ তুলে বিরোধীদের কটাক্ষ করেন মমতা।
বলেন, মমতা ব্যানার্জির শাড়িতে কালি ঢেলে দিলে, মমতা ব্যানার্জিও কাপড়ে মোবিল ঢালতে জানেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বাংলাকে বদনাম করতে পরিকল্পিতভাবে রোদ সকাল থেকে হিংসা বলে। চিৎকার করা হচ্ছে। ফেক ভিডিও ছড়িয়ে বাংলায় উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
একটা ভোজপুরী সিনেমায় একজন মহিলার শাড়ি টেনে ধরার দৃশ্যকে বিজেপির আইটি সেল বাংলার ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করছে।
এদিন বিরোধীদের উদ্দেশে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, দেশলাই জ্বালবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না। শান্তি রক্ষা করুন।