এবার উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় রদবদলের কথা প্রকাশ্যে এল। জানা গিয়েছে, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হাত থেকে নিয়োগের দায়িত্ব তুলে নিচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। ইতিমধ্যেই এই বদলের কথা প্রকাশে এসেছে। সেক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রার্থীদের সুপারিশ করলে, স্কুলের পরিচালন কমিটি সরাসরি প্রার্থীকে নিয়োগ করবেন।
এখানেই একাংশ শিক্ষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন যে, দুর্নীতির ইস্যু থেকে দায়মুক্ত হতেই কি এই নিয়মে রদবদল করল এসএসসি? অবশ্য এসএসসি সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, উচ্চ প্রাথমিকের এই মামলা ২০১৮ সালের আগে। তাছাড়া ২০১৬ সালের উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই কথার উল্লেখও ছিল। তাই সেই অনুযায়ী নিয়োগ হবে। শুধু এক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নয়, প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেবে স্কুলের পরিচালন কমিটি।
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ১৯৯৭ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের গঠন হয়। তখন থেকে এসএসসি প্রার্থীদের পরীক্ষা নিত। তারপর ঝাড়াই-বাছাই করে সুপারিশপত্র দিত। ওদিকে প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিত স্কুলের পরিচালন কমিটি। ২০১৮ সাল থেকে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার দায়িত্বে কাঁধে আসে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। তার পর থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রার্থী বাছাই করে সুপারিশ করতো। অন্য দিকে, শিক্ষক-অশিক্ষক পদে নিয়োগ করতো মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সূত্রের খবর, যেহেতু উচ্চ প্রাথমিকের এই মামলা ২০১৮ সালের আগে। তাছাড়া ২০১৬ সালের উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই কথার উল্লেখও ছিল, তাই শুধু এক্ষেত্রে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নয়, প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেবে স্কুলের পরিচালন কমিটি। সেজন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হাতে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও দায়িত্ব থাকছে না। সরাসরি নিয়োগ করবে স্কুলের পরিচালন কমিটি।
এদিকে, ৯ বছর পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরির সুযোগ পেয়েছেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে কাউন্সিলিংও শুরু হয়েছে। আর দু’দিনের মধ্যেই বাংলা বাদে অন্যান্য মিডিয়ামের কাউন্সেলিং শেষ হয়ে যাবে। তারপর বাংলা মিডিয়ামের কাউন্সেলিং শুরু হবে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ জন প্রার্থীকে কাউন্সেলিংয়ে ডেকেছে এসএসসি। জানা গিয়েছে, ১৪ শতাংশের বেশি চাকরিপ্রাপক কাউন্সেলিংয়ে হাজির হননি। ১০ বছর পর চাকরির সুযোগ হওয়ায়, অনেকের মধ্যেই অনিহা দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই নিয়োগের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটে আটকে ছিল। হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও ফের চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা হয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট মামলা গ্রহণ না-করায়,কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া হাইকোর্টের নির্দেশেই চলবে। ফলে,কতটা দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ হয়, সেদিকেই তাকিয়ে আছেন প্রার্থীরা।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির দায়ে জর্জরিত স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরীক্ষার খাতায় নম্বর দেওয়া থেকে শুরু করে মেধাতালিকা, সর্ব ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ২ বছরে এসএসসি তথা শিক্ষা দফতরের একাধিক প্রাক্তন কর্তাক গ্রেফতারও করা হয়েছে। এবার দায়মুক্ত হতেই নিয়মে বদল আনল এসএসসি! উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ শুরু হয়েছে প্রায় ৯ বছর পরে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কাউন্সেলিং। এরই মধ্যে সামনে এল এই বদলের কথা।