কলকাতা রাজপথে শিক্ষক সমাজের প্রতিবাদী আন্দোলনের মাঝেই প্রধানশিক্ষক নিয়ােগের জট কাটালাে কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের ১৭ নং কোর্টে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের এজলাসে প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে।
বিচারপতি গত ২২ জানুয়ারি নিয়ােগ নিয়ে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ মঙ্গলবার তুলে নেন অর্থাৎ স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে আর কোনও আইনি জটিলতা রইল না। তবে মামলাকারীদের জন্য সমপরিমাণ আসন ফাঁকা রাখতে হবে।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে নােটিফিকেশন সহ কাউন্সেলিংয়ের পদ্ধতিগত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলাটি দাখিল হয়।
প্রায় পাঁচ মাস এই আইনি জটিলতায় আটকে স্থগিত ছিল প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ প্রক্রিয়া। আদালত সূত্রে জানা যায়, এ রাজ্যে ২২৪৫টি আসনের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করে থাকে।
সেখানে অতীতে শিক্ষাগত যােগ্যতায় মার্কশিটে ২০১৫ সালে ৪০ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৪৫ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে ৫০ শতাংশ নম্বর আবশ্যিক রাখা ছিল। তাতে কাউন্সেলিং পর্বে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা যায়।
এরই মাঝে প্রশ্ন তােলা পরীক্ষার্থীরা। কলকাতা হাইকোর্টের সার্ভিস সংক্রান্ত মামলায় স্বনামখ্যাত আইনজীবী একরামুল বারির মাধ্যমে মামলাটি তােলা হয়।
সে সময় অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি বিচারপতি শেখর ববি শরাফ প্রধানশিক্ষক নিয়ােগের নােটিফিকেশন চ্যালেঞ্জ করা মামলায় পুরাে নিয়ােগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন।
প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলতে থাকা এই নিয়ােগ পরীক্ষায় মামলাকারীরা পরীক্ষায় বসতে না পারলেও পরে পরীক্ষায় বসে।
তবে তাদের ফল প্রকাশ আজও হয়নি। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের ১৭ নং কোর্টে বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের এজলাসে সওয়াল-জবাব পর্বে প্রশ্ন ওঠে– কয়েকজন মামলাকারীর জন্য পুরাে নিয়ােগ প্রক্রিয়াটা বন্ধ থাকতে পারে না। এতে পড়ুয়ারা শিক্ষার মতাে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তাই বিচারপতি এদিন গত ২২ জানুয়ারি নিয়ােগ প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ তুলে নেন। অর্থাৎ স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে আর কোনও জটিলতা রইল না।
তবে মামলাকারীদের জন্য সমপরিমাণ আসন ফাঁকা রাখতে হবে। এই মামলার আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী একরামুল বারি জানান, ‘মূল মামলাটি আগামী ১০ জুলাই শুনানি রয়েছে’।
জানা গেছে, কলকাতা হাইকোর্টের আদেশনামা পেয়ে সাতদিনের পর স্কুল সার্ভিস কমিশন প্রধানশিক্ষক নিয়ােগ নিয়ে কাউন্সেলিং পর্ব শুরু করতে পারে।
কলকাতার রাজপথে যখন শিক্ষক সমাজের বড় অংশ বিভিন্ন দাবিতে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলাচ্ছে, সেখান কলকাতা হাইকোর্টের নিয়ােগ সংক্রান্ত নির্দেশিকা কিছুটা স্বস্তি এনে দিল তা বলা যায়।