করোনাভাইরাসের সঙ্গে আপ্রাণ লড়াই চালাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই লড়াইতে বড় সাফল্য এল চিকিৎসকদের ঝুলিতে। সুস্থ হয়ে উঠছে রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত তরুণ। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে আরও দুই করোনা আক্ৰান্তের, এমনটাই জানা যাচ্ছে।
গত ১৫ মার্চ ইংল্যান্ড থেকে ফেরা আমলা-পুত্রের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায়। ১৭ মার্চ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। আপাতত সেখানেই চিকিৎসারত এই তরুণ। আইডি হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ১২ দিন ধরে চিকিৎসায় ভলো সাড়া দিয়েছে এই তরুণ।
প্রথম থেকেই তার শরীরে করোনাভাইরাসের খুব বেশি উপসর্গ দেখা যায়নি। ফলে বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার তার লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নাইসেডে পাঠানো হলেও রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কিন্তু সংক্রমণের মাত্রা ছিল অনেক কম। এদিকে শনিবার তার লালারসের যে নমুনা নাইসেডে পাঠানো হয়েছিল তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের আমলা-পুত্র ইংল্যান্ডে একটি পার্টিতে যোগ দেন, সেখানে তিনি যাদের সংস্পর্শে ছিলেন তাদের কয়েকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল। খবর পাওয়ার পর ওই তরুণকে প্রথমে বাঙ্গুর ও পরে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দেশে ফেরার পর ওই তরুণকে আইসোলেশনের নির্দেশ দেওয়া হলেও সব নির্দেশ উড়িয়ে তরুণটি ঘুরে বেড়িয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
এদিকে, শুধু করোনা আক্রান্ত প্রথম তরুণ নয়, করোনা আক্রান্ত হবড়ার তরুণী এবং বালিগঞ্জের ব্যবসায়ীর মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্টও নেগেটিভ এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
হাবড়ার তরুণীটি স্কটল্যান্ড থেকে সম্প্রতি ফিরেছিলেন। বালিগঞ্জের ব্যবসায়ীর ছেলে ফিরেছিল বিদেশ থেকে। সেখান থেকেই ছড়ায় সংক্রমণ। ছেলের রিপোর্ট পজিটিভ এলেও ব্যবসায়ী চিকিৎসায় ভাল সাড়া দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন এই তিন আক্রান্তের রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় আশ্বস্ত চিকিৎসকমহলও। তবে এখনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন না রাজ্যে প্রথম করোনা আক্রান্ত তরুণ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) গাইডলাইন মোতাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফের একবার তার লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এলে প্রথম করোনা আক্রান্ত তরুণকে সুস্থ হিসাবে বিবেচনা করা হবে। এবং হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
তবে ছাড়া পাওয়ার পর আরও ১৪ দিন তরুণকে রাখা হবে কোয়ারেন্টাইনে পর্যবেক্ষণে। এই ১৪ দিনে তার শরীরে করোনাভাইরাসের নতুন করে কোনও উপকরণ দেখা না যায়, সেক্ষেত্রে তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ বলে ঘোষণা করা হবে।
স্বাভাবিকভাবে রাজ্যের প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত চিকিৎসায় সাড়া দেওয়ায় খুশি চিকিৎসকরা। তারা জানাচ্ছেন, বয়স অল্প থাকায় করোনাভাইরাস সেভাবে কাবু করতে পারেনি আক্রান্তকে। এছাড়া তার অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকায় চিকিৎসায় দ্রুত সাড়া দিচ্ছে।