অভিযােগ সঠিক নয় সাফ জানাল ডিভিসি

প্রতীকী ছবি (Photo:SNS)

দামােদর ভ্যালি কর্পোরেশনের সাফ দাবি, কেন্দ্র-রাজ্যের নজরদারিতে জল ছাড়ার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু নদীগুলির নাব্যতা পলি জমে জমে কমে গিয়েছে সে কারণে জলাধারগুলি জল ধরে রাখতে পারছে না। এমনটাই জানানাে হল ডিভিসির তরফে। শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী বাংলার বানভাসি পরিস্থিতির জন্য ডিভিসিকে দায়ী করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘ঝাড়খণ্ডের বােঝা বইতে হচ্ছে বাংলাকে। না জানিয়ে ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া ‘পাপ’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযােগকে সঠিক নয় বলে দাবি করা হল ডিভিসির তরফে। জানা যাচ্ছে পাঞ্চেত ড্যাম থেকে জল ছাড়া হচ্ছে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে। মাইথন জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়ে ১,১৫,০০০ কিউসেক করেছে।

দিনে মােট দেড়লক্ষ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডে যদি ফের বৃষ্টি হয় তবে জল ছাড়ার পরিমাণ আরও বাড়বে। মুখ্যমন্ত্রী অভিযােগ করেছেন, রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে জল ছাড়া হচ্ছে। যদিও এই অভিযোেগ অস্বীকার করেছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ।


ডিভিসির চিফ ইঞ্জিনিয়র দেবাশিস দেব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযােগ করছেন তা ঠিক নয়। নিয়ম মেনেই জল ছাড়া হচ্ছে। এই জল ছাড়ার জন্য সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন, ডিভিসি ও রাজ্য রেগুলারিটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে রাজ্য সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়র রয়েছেন।

গােটা ব্যাপারটি জানিয়েই জল ছাড়া হয়। তাই এই অভিযােগ সঠিক নয়। যদিও ডিভিসির এই দাবি প্রসঙ্গে সেচমন্ত্রী ড.সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অভিযােগ করেছেন তা সঠিক। কেন্দ্রীয় সরকারকে এবং ডিভিসিকে এই নিয়ে বহুবার চিঠি লেখা হয়েছে।

কিন্তু তারা বিষয়ে অন্যান্য বারের মতােই এবারেও উদাসীন থেকেছেন। জল ছাড়ার কারণেই বানভাসি হয়েছে বাংলা। কেন্দ্র সহযােগিতা করছে না। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে কেন্দ্রের সক্রিয়তা চোখে পড়ছে না বারবার কেন্দ্রকে জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি নিজেই পুরাে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন এবং বাংলার মানুষের পাশে থেকে তাদের কিভাবে সুরাহা দেওয়া যায় তার জন্য উদ্যোগী হয়েছেন।

আজ শনিবার সেচমন্ত্রী চন্দ্রকোণায় যাবেন বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। শুক্রবার সেচ দফতরের সঙ্গে যােগাযােগ রেখে বন্যা পরিস্থিতির মােকাবিলায় উদ্যোগী হয়েছেন সেচমন্ত্রী। এদিকে জল ছাড়ার পরিমাণ ফের বাড়লে বানভাসি পরিস্থিতি হতে পারে। দামােদরের নিম্ন উপত্যকায় এমনটাই আশঙ্কা করা যাচ্ছে। যার জেরে পুজোর আগে ফের দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা ভেসে যেতে পারে।

অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর ম্যান মেড বন্যার তত্ত্বকে খারিজ করে দিয়েছে বিজেপি এবং কংগ্রেস। বামেরাও এর সমালােচনা করেছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। বলেছেন, বামেরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখনও বিরােধী নেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই একই অভিযােগ করতেন।

বাস্তবটা যে তা নয় তা তিনি কবে বুঝবেন কে জানে? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি বলেন, আসলে নাচতে না জানলে উঠন বাঁকা। উনি কথায় কথায় সিবিআই, ইডির বিরুদ্ধে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্টে যেতে পারেন, ম্যান মেড বন্যা বলছেন তাহলে কে দায়ী তারজন্য তাে উনি কোর্টে যেতে পারেন। কেন্দ্র কথা না শুনলে উনি কোর্টে যাচ্ছেন কেন? কারণ ন্যার ফলে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।

বিধানসভার বিরােধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমিও সেচ মন্ত্রী ছিলাম, রাজ্যকে জানিয়েই জল ছাড়া হয়। আসলে উনি ভবানীপুর ভােট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তাই জলমগ্ন হয়েছে বাংলা নজরদারির অভাবে। বাঁধ মেরামতির টাকা নেই সরকারের কাছে।