আবাস যোজনার প্রাপকদের তালিকা তৈরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই বুধবার দুপুর ৩ টায় নবান্নে বিশেষ বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। ভিডিও কনফারেন্সে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এই বৈঠকে জেলাগুলির জেলাশাসক সহ উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত দপ্তরের কর্তারাও। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, তালিকা থেকে বাদ যাওয়া নামগুলি পুনরায় রি–চেক করতে হবে। কিন্তু এই নির্দেশের পরও আবাস যোজনার প্রাপকদের বাড়ির তালিকা তৈরি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে গ্রামে গ্রামে বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হয়। এবার এবিষয়ে সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজ্যবাসীকে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সকল তালিকাভুক্ত মানুষ মাথাপিছু এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পাবেন। এই রি-সার্ভে নিয়ে অহেতুক উদ্বেগের কারণ নেই।’
আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বিবাদ নতুন নয়। এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। এই নিয়ে বারবার প্রতিবাদ জানিয়েছে শাসক দল। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। অবশেষে রাজ্য সরকারের তরফেই আবাস যোজনার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, চলতি বছরের মধ্যে আবাস যোজনায় রাজ্যের ১১ লক্ষ মানুষকে বাড়ি বানানোর জন্য প্রথম কিস্তির টাকা দিয়ে দেবে নবান্ন।
আবাসের টাকা দেওয়ার আগে তালিকা খতিয়ে দেখার পর কয়েকটি নাম তালিকা থেকে বাদ যায়। আগে থেকে বাড়ি রয়েছে এমন অনেকের নামও তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলে দাবি করা হয়। এই সব কারণে গ্রামে গ্রামে ক্ষুব্ধ জনগণ বিক্ষোভ দেখান। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে মানবিক হওয়ার নির্দেশ দেন। মমতার নির্দেশ মতো বুধবার নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। প্রতিটি জেলার জেলাশাসককে এ ব্যাপারে মানবিক ভিত্তিতে সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তালিকা থেকে যোগ্য কারও নাম যাতে বাদ না যায় সেই কারণে পুনরায় খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মনোজ। মুখ্যসচিব বৈঠকে বলেছেন, ‘তালিকা থেকে কারও নাম বাতিল করার আগে দ্বিগুণ নিশ্চিত করতে হবে, তবেই বাতিল করা যাবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও জেলায় জেলায় এই প্রকল্পের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এবিষয়ে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আবাস যোজনা প্রকল্পে কেন্দ্রের ৬০ শতাংশ অর্থ দেওয়ার কথা। কিন্তু দিল্লি সেই টাকা দেয়নি। তাই গরিব মানুষগুলোর স্বার্থে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্যই টাকা দেবে। সেই কারণেই শুরু হয়েছে সমীক্ষা। তিনি আরও জানান, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সকল তালিকাভুক্ত মানুষ মাথাপিছু এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে পাবেন। অহেতুক এই রি-সার্ভে নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।