• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

দাবি মানলেন মুখ্যমন্ত্রী, অবশেষে ধান ভাঙ্গতে  রাজি চালকল মালিকরা, জানালেন খাদ্যমন্ত্রী

রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কোষাধ্যক্ষ কাঞ্চন সোম বলেন,  অনান্য দাবিগুলোর মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের তরফে মেনে নেওয়া হয়েছে।

অবশেষে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলাগুলোতে ধান ভাঙ্গানোর জট কেটে গেল। রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে রাজ্য খাদ্য দপ্তরের ধান ভাঙ্গিয়ে দেবার চুক্তি নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘ সময় ধরে। মূলত রেটবৃদ্ধি সহ ৯ দফা দাবিতে বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন আন্দোলন চালিয়ে যায়। কয়েক দফা আলোচনা করেও দাবি না মেটায় চালকল মালিকরা সাফ জানিয়ে দেন যে, তাঁরা এবার খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে ধান ভাঙ্গানোর চুক্তিতে যাবেন না। ফলে চরম সংকট দেখা দেয় রাজ্যের চাল উৎপাদনে। কিন্তু সংকট কাটাতে রাইস মিলের মালিকরা অবশ্য খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে আলোচনায় রাজি ছিলেন। আর তার পরেই কলকাতার বৈঠকে দাবি মেনে নেওয়ার পর চালকল মালিকরা চুক্তিতে যেতে রাজি হয়েছেন। বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ, পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে চালকল মালিকদের দাবির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সংকেত দিয়েছেন।

এর আগে চালকল মালিকরা সাফ জানিয়ে দেন যে, ধান ভাঙ্গানোর জন্য তাঁদের আগের রেট বাড়ানো না হলে সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে যাবেন না। বেঙ্গল রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন,আমরা দীর্ঘদিন ধরে ৯ দফা দাবিতে সোচ্চার। তার মধ্যে অন্যতম ছিল রেট বৃদ্ধির বিষয়টি। যেখানে এক কুইন্টাল ধান ভাঙ্গতে চালকল মালিকদের খরচ ন্যূনতম প্রায় ১৩০ টাকার মতো। কিন্তু পাচ্ছিলেন মাত্র ৩০ টাকা। এছাড়াও পরিবহন খরচ বাড়ানো সহ অন্যান্য দাবিও জানানো হয়। বর্ধমান জেলা রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি কিরন শংকর মণ্ডল  বলেন, গণবন্ঠন এবং অন্যান্য প্রয়োজনে প্রায় ৩৫ লক্ষ টন চালের দরকার। তার সবটাই সরবরাহ করেন চালকল মালিকরা।

এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলার ১০৩ টি সহ রাজ্যের ৬৫৩ টি রাইস মিল এর সঙ্গে চুক্তি হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, রাইস মিল মালিকদের বেশ কয়েকটি দাবি ছিল। সেগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হয়েছে। ধান ভাঙ্গানোর চুক্তি নিয়ে আর কোনও বাধা নেই। মন্ত্রীর দাবি, বৃহস্পতিবার থেকেই চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি শুরু হয়েছে। তার ফলে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা নিয়েও কোনও বাধা রইলো না। অন্যদিকে চালকল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষ বলেন, রেটবৃদ্ধি নিয়ে চালকল মালিকদের যে দাবি ছিল সেই সংক্রান্ত ফাইল নবান্নে পাঠানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই দাবি মেনে নিয়েছেন। তাই খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে চালকল মালিকদের ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে আর কোন বাধা রইলো না।

রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কোষাধ্যক্ষ কাঞ্চন সোম বলেন,  অনান্য দাবিগুলোর মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের তরফে মেনে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে এক কুইন্টাল চালের জন্য আগের দর যে ১২ টাকা ছিল তার থেকে বৃদ্ধি পাবে, সেই আশ্বাস মিলেছে। চালকল মালিকদের দাবি ২০ টাকা প্রতি কুইন্টালে দেওয়া হোক। পরিবহন খরচ বাড়ানোর যে দাবি ছিল সেটাও মেনে নেওয়া হয়েছে বৈঠকে। আর এ সব মেনে নেওয়ার পর চালকল মালিকরা চাইছেন যে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে চুক্তি হলে ভালো হবে। বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে ওই সময়সীমার মধ্যে।