মৃতদের পরিবারের পাশে প্রশাসন, শুরু চেক বিলি

কয়লা খাদানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে চলে গিয়েছে আট আটটি তরতাজা প্রাণ। এর পর কেটে গিয়েছে অনেকটা সময়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বীরভূমের খয়রাশোল ব্লকের লোকপুরের গঙ্গারামচক মাইনিং প্রাইভেট কোলিয়ারির কয়লাখাদানে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ জানা যায়নি। ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত তদন্তকারী আধিকারিকেরা এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না।

অন্যদিকে, মৃতদের পরিবারের হাতে ৩২ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন বীরভূমের জেলাশাসক বিধানচন্দ্র রায় এবং বিদ্যুৎ দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু। খয়রাশোলের ব্লক থেকেই ক্ষতিপূরণের চেক বিলি করা হয়। ছিলেন বীরভূমের জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম-সহ অন্য আধিকারিকরা।

৮ অক্টোবর দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছিল, সোমবার সকালে কয়লা উত্তোলনের জন্য কয়লাখনি গর্ভে বিস্ফোরণ ঘটাতে একটি লরি করে প্রচুর পরিমাণে জিলেটিন স্টিকের মতো বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কয়লাখনিতে নেমেও কাজ করছিলেন অনেকেই। খয়রাশোল ব্লকের লোকপুরের ভাদুলিয়ার কাছে ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়িটি ঝাঁকুনি খেতেই তাতে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই তীব্র ছিল যে একের পর এক বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বিস্ফরণ ঘটে কয়লাখনির ভিতরেও।


ওই এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বোলপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় প্রাথমিকভাবে জানান, যে গাড়িতে বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই গাড়িতেই অসাবধানতাবশত বিস্ফোরণ ঘটে। আর সেই কারণেই এত বড় দুর্ঘটনা, এত প্রাণহানি। যদিও তিনি এটি প্রাথমিক অনুমান বলে জানিয়েছেন। ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে এলে তবেই বিস্ফোরণের কারণ সঠিকভাবে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে দুর্ঘটনার পরই এলাকা পরিদর্শনে যান জেলাশাসক বিধানচন্দ্র রায় ও জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। সেই সময় দুর্ঘটনাস্থলে বহু সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি দেখে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে আসেন তাঁরা। মঙ্গলবার সকালেও ফের ঘটনাস্থলে বহু মানুষকে ঘোরাফেরা করতে দেখে রীতিমতো বিরক্তি প্রকাশ করেন পুলিশ সুপার। এর পরই তাঁর নির্দেশে দুর্ঘটনাস্থল দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় এবং যে গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেই গাড়িটিও ঘিরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়।

কীভাবে বিস্ফোরণ? মৃত্যুর দায় কার? প্রশ্ন অনেক। বিস্ফোরণ কাণ্ডে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। এনআইএ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন এক আইনজীবী। মামলাকারীর দাবি, একমাত্র এনআইএ এই মামলার সঠিক তদন্ত করতে পারে। মামলা দায়েরের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম।

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভারতীয় অবহেলিত পার্টি নামে এক রাজনৈতিক দলের সম্পাদক দীপককুমার সরকারের হয়ে আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান। বিষয়টির গুরুত্ব বিচার করে মামলা দায়েরের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতি। পুজোর পর আগামী ১৪ অক্টোবর মামলার শুনানির সম্ভাবনা।