ভাইরাল শিক্ষিকা-ছাত্রের সিঁদুরদান, গায়ে হলুদের ভিডিও। সেই বিয়ে দেখতে উপস্থিত বেশ কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক। ক্লাসের ভিতরেই অধ্যাপিকাকে সিঁদুর পরিয়ে দিল ছাত্র। এমনকি কলেজের প্যাড ব্যবহার করে সেখানে বিয়ের সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন তিনজন। এই ভিডিওকে ঘিরে শুরু হয়েছে তোলপাড়। তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে, নদিয়ার হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের।
বেশ কয়েকটি ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয় মঙ্গলবার রাতে। শুরু হয় গুঞ্জন। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ম্যাকাউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই শিক্ষিকা ও ছাত্রের গায়ে হলুদ মাখিয়ে দিচ্ছেন বেশ কয়েকজন
ছাত্র-ছাত্রী থেকে অধ্যাপকরা। এরপর বিয়ের সমস্ত রীতিই দেখা গিয়েছে ভিডিওতে। শুভদৃষ্টি থেকে সিঁদুরদান, সাতপাক ঘোরা থেকে মালাবদল কোনোটাই বাদ যায়নি। সবটাই করা হয়েছে ভিডিও। উপস্থিত ছিলেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী থেকে অধ্যাপক। তবে ভিডিও দেখে উঠেছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন। এই বিয়েতে ছিলেন না কোনো পুরোহিত। হয়নি মন্ত্রোচ্চারণ। এমনকি মোমবাতি জ্বালিয়ে পালন করা হয়েছে সাতপাক রীতি।
যদিও এই বিয়ে নিয়ে সন্দেহের দানা বেঁধেছে। সন্দেহ আরো বেড়েছে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাডে শিক্ষিকা-ছাত্রের বিয়ের সাক্ষীদের স্বাক্ষর করাকে কেন্দ্র করে।
ম্যাকাউট বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে, চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি। শিক্ষিকা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্ল্যায়েড সাইকোলজি বিভাগের প্রধান এবং ছাত্র প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র। ভিডিও ভাইরাল হতেই বিষয়টি ওই অধ্যাপিকার কাছে জানতে চাওয়া হয়। ম্যাকাউট বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ওই অধ্যাপিকা জানিয়েছেন, এটা তাঁদের পাঠ্যক্রমে থাকা প্রজেক্টের অঙ্গ। সবার উপস্থিতিতেই পুরো বিষয়টি ভিডিও করা হয়েছে।
যদিও এখানেই উঠছে প্রশ্ন। কোন পাঠ্যক্রমে বিয়ের প্রজেক্ট রয়েছে? ইতিমধ্যেই ওই অধ্যাপিকাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ম্যাকাউট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. পার্থপ্রতিম লাহিড়ী বলেন, আমার কর্মজীবনে এই ধরনের ঘটনা দেখিনি। হতচকিত হয়েছি স্বাভাবিকভাবেই। এটা না হলেই ভালো হত।
তবে জানতে পেরেছি, অ্যাপ্ল্যায়েড সাইকোলজি বিভাগের একটি প্রজেক্টের অঙ্গ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে করলে ভালো হত। মহিলাদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যে ওই শিক্ষিকাকে বিভাগীয় প্রধান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বাকি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও ওই শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি, এমনকি হোয়াটসঅ্যাপের কোনো উত্তর দেননি। এই প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন অন্য পড়ুয়া থেকে অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা।