কেন্দ্রকে তােপ মমতার ‘আমাকে হিংসে করে, সে কারণেই রােমে যেতে দিচ্ছে না’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo:SNS)

কেন্দ্রীয় সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রােমে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। এমনই চিঠি এসেছে কেন্দ্রের তরফে নবান্নের কাছে। শনিবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্র ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে নিজের নির্বাচনী প্রচার সভায় এসে এ নিয়ে রীতিমতাে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা।

তার প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলেন, অথচ আমাকে কেন যেতে দেওয়া হল না? আমাকে হিংসে করে বলেই আটকানাে হল।’ এদিন এভাবেই নরেন্দ্র মােদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপিকে তুলােধনা করেন তৃণমুল সুপ্রিমাে। এদিনই সকালে জানা যায়, তার রােম সফরে অনুমতি দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার।

মমতা আরও বলেন, ‘কোভ্যাক্সিন নিয়ে কেউ আমেরিকা-ব্রিটেনে যেতে পারবেন না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভ্যাক্সিনকে মান্যতা দেয়নি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বিশেষ অনুমতি নিয়ে গিয়েছেন। যাদের কাজের প্রয়ােজন আছে, তাদের অনেকেই নিজের কাজে যেতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী গিয়েছেন, যেতে দাও।


কিন্তু আমাকে কেন প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়া হল না? আমি ওখানে গিয়ে হিন্দুত্বের প্রতিনিধিত্ব করতাম। মুখে এত বড় বড় হিন্দুত্বের কথা বলেন, আর এদিকে প্রতিহিংসাশত আমাকে আটকানাে হল। রােম সফরে মমতার যাওয়ার উদেশ্য ছিল, সেখানে বিশ্বশান্তি নিয়ে একটি সম্মেলন হচ্ছে।

এতবড় বিশ্ব শান্তি সম্মেলন আগে কখনও হয়নি বলে মমতা জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘দু’মাস আগে তাঁরা আমার সঙ্গে যােগাযোেগ করেছিলেন। জার্মান চ্যান্সেলর যানে, থাকবেন পােপও। মিশরের ইমাম থাকবেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। ইতালি সরকার আমাদের বিশেষ অনুমতি দিয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু চিঠি দিয়ে অনুমতি দিতে অস্বীকার করা হল। কলা হল, মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে এ ধরনের অনুষ্ঠানে যাওয়া ঠিক হবে না। ঠিক এভাবেই কেন্দ্রের সমালােচনায় এদিন মুখর হন মমতা। শুধু রােম সফরই নয়। এর আগে কেন্দ্র বেশ কয়েকটি সফরের অনুমতি না দেওয়ায় মমতার পক্ষে বিদেশ সফর বাতিল করতে হয়। ২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী কুনমিং সফর কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না মেলায় বাতিল করতে হয়।

এদিন সেই প্রসঙ্গও নিজের বক্তব্যে টেনে এনেছেন মমতা। বলেছেন, ‘আমি যেখানেই যেতে চাই, সেখানেই বারণ করে দেওয়া হয়। আমাকে ছাড়া অন্যদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাে এমনটা হয় না। যদি শান্তির কথা আসে, তাহলে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযােগ কেন আমাকে দেওয়া হল না? আমি বিদেশে ঘুরতে যাই না। সে আগ্রহ আমার নেই। যেখানে দেশের সম্মান যুক্ত, সেখানে আমাকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযােগ দেওয়া উচিত ছিল। আমাকে যেতে না দিয়ে বেআইনি করছেন, বেইজ্জত করছেন।

আগামী ৬ ও অক্টোবর রােমের এই অনুষ্ঠানে বিশ্বশান্তি নিয়ে আলােচনা হওয়ার কথা ছিল । মুখ্যমন্ত্রীর সফর বাতিল হওয়ায় এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘আসলে এটা দিল্লির সরকারের ছােটমনের পরিচয়। অতীতে মুখ্যমন্ত্রীকে শিকাগােতে ভাষণ দিতে যেতে দেওয়া হয়নি।

যদিও বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার নীতি মেনেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদেশ সফরে অনুমতি দেওয়ার একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। সেটা অনুসরণ করতে হয় সরকারকে। এর মধ্যে রাজনীতি টেনে না আনাই ভালাে।