ময়দান এলাকায় গাছ কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কলকাতা মেট্রোর পার্পল লাইন, অর্থাৎ জোকা থেকে এসপ্ল্যানেড কাজের জন্য আপাতত আর কোনও গাছ কাটা যাবে না। শুক্রবার এই অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ , মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। তিন সপ্তাহ পরে ফের সুপ্রিম কোর্টে সেই মামলার শুননি হবে।
কলকাতা মেট্রোর পার্পল লাইনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড, অর্থাৎ আরভিএনএল-কে কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে এটা নিশ্চিত হবে যে নতুন করে যেন একটাও গাছ কাটা না হয়। প্রসঙ্গত , মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মেট্রোর কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে মেট্রো কর্তৃপক্ষ ময়দান এলাকায় নতুন করে গাছ কাটতে উদ্যোগী হয়। মেট্রোর এই কাজের জন্য প্রায় ৭০০ গাছ কেটে ফেলার আশঙ্কায় গত বছর অক্টোবরে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন কলকাতা’ নামে ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছিল যে এমনিতেই কলকাতার তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে ‘কলকাতার ফুসফুস’ ময়দান এলাকায় এতগুলি গাছ কেটে ফেলা একেবারেই সমীচীন হবে না। তাতে পরিবেশের ক্ষতি হবে।
সেই জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে অক্টোবরেই কলকাতা হাইকোর্ট অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল যে মেট্রোর কাজের জন্য আপাতত নতুন করে কোনও গাছ কাটা যাবে না। পরবর্তীতে সেই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়িয়েছিল হাইকোর্ট। ফলে মেট্রোর কাজের জন্য নতুন করে কোনও গাছ কাটতে পারেনি আরভিএনএল।
তারই মধ্যে চলতি বছরের জুনে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল যে অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করেছে আরভিএনএল। আর যে সংখ্যক গাছ কাটা হবে, সেগুলি পরবর্তীতে লাগিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কিন্তু মামলাকারী সংগঠনের তরফে হাইকোর্টকে সেই তথ্য জানানো হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিয়েছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি ভট্টাচার্যের বেঞ্চ।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল আবেদনকারী পক্ষ। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বলে, , ‘তিন সপ্তাহ পরে আবার শুনানি হবে. ততদিন পর্যন্ত গাছ কাটা বা নতুন গাছ লাগানো যাবে না।’ আরভিএনএল-এর আইনজীবীকে বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘আপনারা কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু একটিও গাছ যেন কাটা না পড়ে।