গঙ্গাসাগরের প্রস্তুতি পরিদর্শনে সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা

নিজস্ব চিত্র

ঐতিহ্যবাহী গঙ্গাসাগরের মেলা নিয়ে বরাবরই সতর্ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রতিবারই মাস-ছয়েক পূর্ব থেকেই মেলার প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে। ব্যতিক্রম হলো না এবারও। ছট পুজো মিটতেই ২০২৫-এর গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে চললো পরিদর্শন-পর্ব। রবিবার গঙ্গাসাগর মেলা গ্রাউন্ড পরিদর্শন করেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও-সহ জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিকগণ এবং গঙ্গাসাগর মেলা আধিকারিকগণ। পরিদর্শন শেষে মেলা প্রাঙ্গনের বিশালাকার ম্যাপ বের করেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ম্যাপের বিভিন্ন প্রান্ত চিহ্নিত করে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রশাসনিক আধিকারিকদের চলে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। প্রসঙ্গত, গতবার নির্দিষ্ট এলাকা ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় ভেসেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছিল, ফলে মাঝনদীতে দীর্ঘক্ষণ আটকে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থারও সমস্যা ছিল। জেটিঘাট থেকে বার্জেরও সমস্যা ছিল খানিক, এমনকি মেলা প্রাঙ্গণে ব্যারিকেড জনিত কিছু বাড়তি সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছিল গতবার। এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুরনো ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই দ্রুত নিজ প্রস্তুতি সারতে তৎপর জেলা প্রশাসন। গতবারের মতো এবারও পরিবেশবান্ধব মেলা করার লক্ষ্যে আবারও প্লাস্টিক বর্জনের উপরে জোর দিয়েছে গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের দুর্গোৎসবের আগেই শুরু হয়ে গিয়েছিল গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৫-এর প্রস্তুতি। এবার মেলার আগে ও পরে ড্রেজিং এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে জোর দেওয়া হবে লক্ষ্য নিয়েছে জেলা প্রশাসন। গতবারে যে সমস্ত ছোটখাট ভুলত্রুটি ছিল সেগুলি ঠিক করে গঙ্গাসাগর মেলাকে নতুনরূপে সকলের কাছে তুলে ধরতে চাইছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে এ নিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার নেতৃত্বে একটি বৈঠকও করা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগেবাগেই মুড়িগঙ্গা নদীতে ড্রেজিংয়ে জোর দেওয়া হবে। পাশাপাশি, এবার আরও বাড়ানো হবে প্রযুক্তির ব্যবহার। মোবাইল, ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নতির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, গতবার তীর্থযাত্রীদের থাকার জন্য ‘বাফার জোন’ তৈরি করা হয়েছিল, সেই সঙ্গে কচুবেড়িয়া বাস স্ট্যান্ড এবং গঙ্গাসাগর বাস স্ট্যান্ড থেকে মেলা চত্বরে ১ থেকে ৫ নম্বর রাস্তা আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল। পাশাপাশি তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে করা হয়েছিল ৬ নম্বর রাস্তাও। ওই রাস্তা দিয়ে তীর্থযাত্রীরা অনায়াসেই মকরস্নান সেরে মন্দিরে পুজো দিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পেরেছিলেন। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট একটি অস্থায়ী হাসপাতালও তৈরি করা হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, ২৪ ঘণ্টা বাস এবং লঞ্চ পরিষেবার পাশাপাশি তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে রাজ্য সরকার ২২৫০টি সরকারি বাস চালিয়েছিল। পূর্ব রেলের তরফে ৬৬টি অতিরিক্ত ট্রেনও চালানো হয়েছিল গতবার। তবে এবারের প্রস্তুতি কতদূর, তা স্পষ্ট ভাবে এখনও জানা না গেলেও রাজ্য সরকার যে তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তায় কোনো খামতি রাখবে না তা বলাই বাহুল্য।