পশ্চিমঙ্গের নদিয়া জেলার হাঁসখালিতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বার্থ ডে পার্টিতে ডেকে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। সেই দিন রাতেই নির্যাতিতা তরুণীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে গোটা বাংলা আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিল বিরোধীরা।
সোমবার এক সরকারি অনুষ্ঠান থেকে হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে মুখ খুলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেছিলেন, “ওই মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে, না মেয়েটি প্রেগন্যান্ট ছিল, তা আগে খতিয়ে দেখা দরকার।’
মমতার এই মন্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করেন, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছিলেন নেটিজেনরা।
এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ২০১২ সালে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের নির্যাতিতার নির্ভয়ার মা আশা দেবী। ২০১২ সালে নির্ভয়ার ঘটনায় গোটা দেশ প্রতিবাদে সরব হয়েছিল, নির্ভয়াকে নির্মমভাবে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। গোটা দেশেই এই ঘটনার প্রতিবাদে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন।
তবে শেষমেশ হাজার চেষ্টার পরও নির্ভয়াকে প্রাণে বাঁচানো যায়নি। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে নির্ভয়ার মা বলেন, ‘মমতা যদি নির্যাতিতাকে নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তবে এর চেয়ে দুঃখের কিছু হয় না।
একজন মহিলা হয়েও তিনি যদি এমন মন্তব্য করেন, তবে তিনি যে পদে রয়েছেন, তা তাঁকে মানায় না। এই মামলা যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া উচিত। এই মন্তব্যে এই ধরনের অপরাধকে উৎসাহ দেবে।
এমনকি নির্যাতিতার ওপরও এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই ধরনের রাজনীতিবিদরা শুধু ভোটব্যাঙ্কের কথাই ভাবেন।’ গতকালই এক সরকারি অনুষ্ঠান থেকে হাঁসখালি প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মুখ খুলতেই তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছিল।
তিনি বলেছিলেন, ‘সংবাদমাধ্যমগুলি এই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে। তারা দেখাচ্ছে ওই কিশোরী ধর্ষণের কারণে মারা গিয়েছেন। আপনার একে ধর্ষণ বলবেন? ওই মেয়েটি কি গর্ভবতী ছিল, নাকি এটা লাভ অ্যাফেয়ার্সের ঘটনা? তারা কি এটা তদন্ত করে দেখেছে?
আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। আমাকে বলা হয়েছিল নির্যাতিতা কিশোরী ও অভিযুক্তের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।’