বিনীতের মেডেল কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব শুভেন্দুর

এবার কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে দেওয়া রাষ্ট্রপতির জোড়া পুলিশ পদকও কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পাশাপাশি, আরও একটি চিঠি তিনি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও। যাঁর মন্ত্রকের অধীন দেশের পুলিশবাহিনী। দু’টি চিঠিতেই শুভেন্দু স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ওই পুলিশি কৃতিত্বের ওই পদক পাওয়ার ‘যোগ্য নন’ বিনীত। কারণ, তাঁর নেতৃত্বাধীন কলকাতা পুলিশ আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই দু’টি চিঠিই নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। তাতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু রাষ্ট্রপতিকে লিখেছেন, পুলিশের কাজের কৃতিত্বকে সম্মান জানাতেই ভারতের রাষ্ট্রপতি ‘প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল’ এবং ‘পুলিশ মেডেল’ দেওয়ার নিয়ম চালু করেছে।

তবে ওই মেডেলের কৃতিত্ব কারও একার নয়। সব সময়েই দলগত। সম্মান জানানোর ক্ষেত্রে দলের বদলে দলপতি, অর্থাৎ পুলিশের পদাধিকারীকে ওই পদক দেওয়া হয়। সঙ্গে দেওয়া হয় নানা সুযোগ, কিছু সুবিধা এবং আর্থিক পুরস্কারও। শুভেন্দু জানিয়েছেন, ২০১৩ এবং ২০২৩ সালে বিনীতও পুলিশের কৃতিত্বজনিত ওই দু’টি সম্মান লাভ করেছিলেন। কিন্তু তিনি ওই পদকের মর্যাদা রাখতে পারেননি। শুভেন্দু ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে এত দিনে স্পষ্ট, কী ভাবে পুলিশ কমিশনের অপরাধস্থলের তথ্য ও প্রমাণ বিকৃত করে তদন্ত প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি ওই পদক রাখার যোগ্য নন। তিনি নিজের কাজের জন্য শুধু নিজের নাম নয় কলকাতা পুলিশের ১৬৮ বছরের সুনামও ডুবিয়েছেন।’ ওই মর্মেই রাষ্ট্রপতি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘বিনীতকে দেওয়া পদক দু’টি ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করছি।’ যুক্তি হিসাবে শুভেন্দু সংশ্লিষ্ট আইনের উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ওই পদকের যে নির্দেশিকা, তাতে বলা আছে, ওই পদকের অধিকারী অসততার অভিযোগে দোষী হলে অথবা কাজের ক্ষেত্রে কাপুরুষতার পরিচয় দিলে তাঁর কাছ থেকে ওই পদক প্রত্যাহার করে নেওয়া হতে পারে।’

এমনকি, শুভেন্দু লিখেছেন, ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফেও ওই নির্দেশিকার কথা জানিয়ে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। যেখানে বলা হয়েছিল, পুলিশি পদকের যে সমস্ত নির্দেশিকা রয়েছে, তা মেনে না চললে ধরে নিতে হবে, নির্দেশিকাকে অমান্য করা হয়েছে এবং সে ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপ করা হতে পারে। ওই যুক্তিতেই বিনীতের পাওয়া জোড়া পদক কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন শুভেন্দু। তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশকে “ধর্ষণপ্রদেশ” বানিয়েছে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার। এই যুক্তিতে তো তা হলে উত্তরপ্রদেশের সব পুলিশ অফিসারের চেয়ার কেড়ে নেওয়া উচিত। যাঁরা ব্রিজভূষণকে বীরের তকমা দেন, প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারাণসীতে ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের মালা পরিয়ে সংবর্ধিত করেন, তাঁদের মুখে এ সব মানায় না। শুভেন্দু আগে নিজের দলের দিকে দেখুন।’ এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে তুমুল আলোচনা।