নিজস্ব সংবাদদাতা, সন্দেশখালি: অবশেষে হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে সন্দেশখালিতে যাওয়ার অনুমতি দিল রাজ্য পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার ১৪৪ ধারা ও পুলিশের বাধা পেরিয়ে সন্দেশখালি পৌঁছলেন শুভেন্দু অধিকারী ও শঙ্কর ঘোষ। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে রাজ্য পুলিশ সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করে। নিষেধ করা হয় কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণে। কিন্তু আগেই সন্দেশখালিতে একতরফা ১৪৪ ধারা প্রয়োগে আপত্তি জানায় রাজ্যের উচ্চ আদালত। এরপরেই শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে একাধিকবার বাসে করে সন্দেশখালি যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রত্যেকবারই আটকে দেয় পুলিশ।
এরপর আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। গতকাল সোমবার সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের সবুজ সঙ্কেত মেলে। কড়া পুলিশি প্রহরায় আজ নৌকায় করে যদি পার হয়ে সন্দেশখালিতে পৌঁছে গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানকার মানুষের সঙ্গে সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে তাঁরা কথা বলেন। তবে এদিন শুভেন্দুর সঙ্গে সন্দেশখালিতে যাওয়া বিজেপি নেতা কর্মীরা একজন পুলিশ কর্মীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় রাজ্যজুড়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এদিন সন্দেশখালি যাওয়ার পথে রাজ্য পুলিশের বাধার মুখে পড়েন বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। কারণ যাওয়ার পথে পড়ে ধামাখালি। সেখানে নতুন করে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। নিয়ম অনুসারে সেখানে আটকানো হয় বিজেপির প্রতিনিধি দলকে। তখন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের বচসা বাধে। সেসময় আচমকা এক শিখ ধর্মাবলম্বী আধিকারিককে খলিস্তানি বলে অভিযোগ করেন বিজেপির নেতা কর্মীদের কেউ। এই নিয়ে ঘটনাস্থলে তুমুল বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়।
এই ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আজ বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি সমস্ত সাংবিধানিক সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বিজেপির কাছে পাগড়ি পরিহিত সকলেই খলিস্তানি। আমি আমাদের শিখ ভাই-বোনেদের সম্মানকে তুচ্ছ করার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই।’
এদিকে এই চাপান উতোরের মধ্যে রাজ্য সরকার আজ ফের সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। সন্দেশখালি-২ ব্লকের পাঁচ জায়গায় এই ধারা জারি করেছে পুলিশ। সন্দেশখালি, ধামাখালি ফেরিঘাট, পাত্রপাড়া, ভোলাখালি ও ত্রিমোহনি বাজারে এই ধারা প্রয়োগ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এইসব এলাকায় মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এইসব এলাকায় অযথা জমায়েত বরদাস্ত করা হবে না।