ট্যাবের অর্থ নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগে দুই জেলা থেকে অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করল বর্ধমান জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার মালদহ ও উত্তর দিনাজপুর থেকে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের বয়স ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। এই চক্রে আরও কেউ জড়িয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।
সোমবারই বিভিন্ন জেলায় গিয়ে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ট্যাব কেলেঙ্কারি নিয়ে নবান্নে একটি বৈঠকও করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনি এই বৈঠক থেকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতেও বলেছিলেন। সেই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবারই ধরপাকড় শুরু করল পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে রাজ্য সরকারের দেওয়া ট্যাব কেনার টাকা হাতিয়েছেন।
মঙ্গলবার মালদহ থেকে এক জন এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া ও ইসলামপুর থানা এলাকা থেকে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মালদহ থেকে ধৃত ব্যক্তির নাম হাসেম আলি। তাঁর বাড়ি বৈষ্ণবনগর এলাকায়। তিনি স্থানীয় একটি সাইবার ক্যাফের মালিক। অপরদিকে উত্তর দিনাজপুর থেকে ধৃত ব্যক্তিদের নাম আশারুল হোসেন, সাদ্দিক হোসেন ও মোবারক হোসেন। তাঁদের মধ্যে আশারুল রামগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা এবং সাদ্দিক ও মোবারক চোপড়া থানার দাসপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, জুলাই মাসে হাসেম মোবাইলে বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ঢোকেন। এরপর একটি অ্যাকাউন্টে ঢুকে তথ্যও বদলে দেন। যে মোবাইলটি হাসেম ব্যবহার করতেন সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাকি যে তিন জন ধরা পড়েছেন, তাঁরা পেশায় শ্রমিক। পাশাপাশি তাঁরা সাইবার ক্যাফেতেও কাজ করতেন।
সোমবার বিকেলে নবান্নে আয়োজিত বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে পাঁচ জেলার ডিএম ও এসপিদের। এই ঘটনার পিছনে কোনও বড় চক্র কাজ করছে কি না তা তদন্ত করে দেখতে বলেছেন মুখ্যসচিব। এছাড়াও ফোর্সকে আরও বেশি সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্যাব কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব। সোমবারের এই নির্দেশের পর মঙ্গলবারই এই ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হল।
ট্যাব নিয়ে রাজ্যে প্রায় ২ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, মালদহ সহ আরও দুটি জেলার কয়েকজন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পাননি। মুর্শিদাবাদে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মোট ৪৮৪১ জন পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গড়ে ২০ হাজার টাকা ঢুকেছে। পড়ুয়ারা ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকার বদলে কীভাবে ২০ হাজার টাকা পেলেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। এছাড়াও আসানসোল, কাঁকসার সরকারি স্কুলেও ট্যাব কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে।