হাতিদের রাখি পরিয়ে বন্যপ্রাণী বাঁচানোর শপথ নিলেন উত্তরবঙ্গের পড়ুয়ারা

একদিকে যখন ঝাড়গ্রামে গর্ভবতী হাতিকে বর্শা দিয়ে খুঁচিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেই সময় উত্তরবঙ্গে হাতিদের বাঁচানোর শপথ নিলেন পড়ুয়া ও স্বেচ্ছাসেবীরা। সোমবার রাখিপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে হাতিদের রাখি পরিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে দেখা গেল পড়ুয়া সহ ওই পরিবেশপ্রেমীদের। এদিন ময়নাগুড়ির ব্লকের রামশাই মেদলা ক্যাম্পের পাঁচ কুনকি হাতিকে রাখি পরানো হয়।

পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে রাখিপূর্ণিমায় এই দিনটা আমরা এভাবেই উদযাপন করছি। বন দপ্তরের সহযোগিতায় এদিন এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমরা হাতি রক্ষার শপথ নিয়েছি।’ চারদিকে যেভাবে হাতি-মানুষ সংঘাত বেড়ে চলছে এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হাতিদের মৃত্যু ঘটছে, সেটা যথেষ্ট চিন্তার। অনির্বাণের কথায়, ‘সম্প্রতি ঝাড়গ্রামে হাতির সঙ্গে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক ঘটনা ইতিমধ্যে সাড়া ফেলেছে। হাতির গায়ে আগুনের গোলা ছুড়ে মারার মতো নিষ্ঠুর ঘটনা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তাই এদিন রাখি পরিয়ে হাতি রক্ষার অঙ্গীকার করলাম আমরা।’

রাখির অনুষ্ঠানের আগে রামশাই ক্যাম্পের পাঁচ কুনকি হাতিকে এদিন দুপুরে স্নানের পর রূপচর্চা করানো হয়েছিল। তারপর শিলাবতী, আমনা, রামী, অরণ্য এবং রাজাকে নিয়ে যাওয়া হয় কালীপুর ইকো ভিলেজে। সেখানে মাহুতদের সাহায্যে তাদের রাখি পরাল সেজুতি নন্দী, সুপ্তিকা পোদ্দার, অনন্যা মজুমদাররা। পড়ুয়া সেজুতি নন্দী বলল, ‘প্রথমবার এই ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। হাতিদের জন্য এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি৷ হাতিদের বাঁচানোর পাশাপাশি হাতি-মানুষ সংঘাত থামুক, সেটাই চাই।’


অনুষ্ঠানের পর ‘লাঞ্চের’ মেনুতে ছিল কুনকিদের প্রিয় খাবার। হাতিদের পাশাপাশি এদিন মাহুত, পাতাওয়ালা সহ বনকর্মীদেরও রাখি পরিয়ে মিষ্টিমুখ করানো হয়। এদিনের এই অনুষ্ঠানে পরিবেশপ্রেমীদের সঙ্গে ছিলেন গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সাউথ রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার সুদীপ দে প্রমুখ। বন দপ্তরের আধিকারিকরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।