লকডাউনে বজ্রআঁটুনি

লকডাউন (File Photo: Kuntal Chakrabarty/IANS)

করোনা শৃঙ্খল ভাঙতে লকডাউনের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিবারের মতো শনিবারও তৎপর ছিল পুলিশ। সাপ্তাহিক লকডাউনের নিয়মকানুন আমজনতার রপ্ত হয়ে গেলেও সচেতনতার অভাবে নিয়মভাঙার রীতি যে একেবারেই নেই তা বলা যাচ্ছে না। তবে অকারণে বাড়ির বাইরে বেরনো বেপরোয়াদের বাগে আনতে শনিবারও রাজ্যজুড়ে তৎপর ছিল পুলিশ।

আগস্টের দ্বিতীয় লকডাউনের দিনে সকাল থেকেই জারি ছিল কড়াকড়ি। এদিন কলকাতা শহরের বেশিরভাগ রাস্তাঘাট শুনশান থাকলেও কোথাও কোথাও গলির মোড়ে বিক্ষিপ্ত জটলা দেখা গিয়েছে। তবে ওইসব অলিগলির আড্ডা ভেঙে দিতে সক্রিয় ছিল পুলিশ। গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রাস্তায় বেরনো মানুষজনকে।

শনিবার পূর্ণ লকডাউনে বেহালা থেকে বালিগঞ্জ, ট্যাংরা থেকে টালিগঞ্জে প্রায় একই দৃশ্য ধরা পড়েছে। দিনভর কলকাতা পুলিশের বিশেষ বাহিনী টহল দিয়েছে শহরের বিভিন্ন মিশ্র এলাকা থেকে শুরু করে বড় বড় বাজার সন্নিহিত অঞ্চলে। মা উড়ালপুল থেকে শুরু করে ধর্মতলা, পার্কস্ট্রিটের মতো জমজমাট এলাকাও এদিন ছিল প্রায় জনবিরল, নিঃস্তব্ধ।


মৌলালি ক্রসিং থেকে বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, মুদিয়ালী থেকে বৃহত্তর কলকাতার আত্রা রোডের প্রায় সর্বত্রই লকডাউন বিধি যথাযথভাবে মানার চিত্র ধরা পড়েছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় যে বিপরীত চিত্রও ছিল না এমনটা নয়। যেমন ইকো পার্ক থানা এলাকায় লকডাউন অমান্যকারীদের লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করতে দেখা যায় পুলিশকে। নিউটাউন অঞ্চলে একটি লটারির দোকান খুললে তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ।

এদিন পথচলতি মানুষ, বাইক-সাইকেল আরোহী, প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা মানুষকে দেখলেই বাড়ির বাইরে বেরনোর উপযুক্ত কারণ জানতে চেয়েছে পুলিশ। এভাবেই শহরের সর্বত্রই পুলিশি সক্রিয়তা ছিল চোখে পড়ার মতো। মেটিয়াবুরুজ থেকে মূল অ্যাভিনিউ, ময়ুরভঞ্জ থেকে এম জি রোড সহ শহরের বিভিন্ন এলাকাজুড়ে ছিস বিশেষ নাকা চেকিং-এর ব্যবস্থা।

হাওড়া ব্রিজের কাছে রেলওয়ে ট্রাফিক গার্ডের তরফে নাকা চেকিং চলেছে। পুলিশের নজর এড়ানোর এতটুকু ছাড়পত্র মেলেনি শহরবাসীর। যথাযথ উপযুক্ত নথিপত্র দেখাতে না পারায় শনিবার দুপুর বারোটা পর্যন্ত ন’টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে কলকাতা পুলিশ। লকডাউনের নির্দেশ না মানায় ৩০৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুরক্ষাবিধি লঙঘন করে মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরনোর জন্য শনিবার দুপুর বারোটা পর্যন্ত ২৪২ জনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট আইনানুগ পদক্ষেপ নিয়েছেন কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক।

কলকাতার মতো জেলাগুলিতেও এদিন লকডাউন বজায় ছিল। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের নজরদারিতে এদিন ওই অঞ্চলে লকডাউন সফল হয়। আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে প্রতিটি রাস্তায় ছিল নাকা চেকিং। বিশেষ করে কুলটি থানার বাংলা ঝাড়খণ্ড ডুবুডি চেক পোস্টে ছিল কড়া নজরদারি। সমস্ত দোকানপাট ছিল বন্ধ। কিছু কিছু জায়গায় দোকানপাট খোলার চেষ্টা করা হলে পুলিশ গিয়ে তা বন্ধ করে দেয়। এদিন লকডাউন অমান্য করার দায়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনস্থ অঞ্চলে গ্রেফতারও করা হয়েছে কয়েকজনকে।