“রাজ্যের বকেয়া টাকা কেন্দ্রের বাবার টাকা নয়”, কেন্দ্রকে আক্রমণ কাকলির

নিজেস্ব সংবাদদাতা, হাবড়া: গতকাল বৃহস্পতিবার হাবরা -১ নম্বর ব্লকের কুমড়া – কাশিপুর পঞ্চায়েতে একটি অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ জন ভূমিহীন চাষীদের হাতে জমির পাট্টা প্রদান করলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বারাসত এবং বনগাঁ সংসদীয় এলাকার ভূমিহীন চাষীরও এদিন পাট্টা সংগ্রহ করেন।

এছাড়াও পঞ্চায়েত এলাকার নিরাপত্তা আরও সুনিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরার নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। হাবরা-১ ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত এবং বারাসত সহ প্রায় বিভিন্ন এলাকায় ১৫০ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সংসদ তহবিল থেকে প্রায় ৯৭ লক্ষ টাকা খরচ করে সি সি ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে বলেই খবর।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী, বারাসাতের মহকুমা শাসক সোমা দাস, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অজিত সাহা, জ্যোতি চক্রবর্তী, পৌরসভার উপ অধ্যক্ষ সিতাংশু দাস, বারাসাতে এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হালিমা বিবি সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আইসিডিএস কর্মীরা কাকলির হাতে ফুলের স্তবক তুলে দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।


এদিন হাবড়ার মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন কাকলি। কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক লক্ষ পনেরো হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে পায় রাজ্য। সেই টাকা কেন্দ্রের বাবার টাকা না। এই টাকা বাংলার মানুষের টাকা”। এই টাকা আটকে রেখে বাংলার মানুষকে জব্দ করতে চাইছে বিজেপি। যার ফল তারা লোকসভা নির্বাচনে পাবে। সন্দেশখালির অজুহাত দিয়ে লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বারাসাতে সভা করে কোনও সুবিধা করতে পারবে না বিজেপি।

বাংলায় যা উন্নয়ন হয়েছে, সবটাই জনদরদী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে কাকলি বলেন, নির্বাচন আসলেই আপনারা দেখবেন, দিল্লি থেকে পরিযায়ী বহু শীর্ষ নেতৃত্বের আনাগোনা লেগেই থাকে বাংলায়। আবার ভোট শেষ হয়ে গেলে ওনাদের আর বাংলার আসতে দেখা যায় না। বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রে তিনবার সাংসদ হয়েছি আমি। দিনরাত পরিশ্রম করেছি আপনাদের জন্য। কেন্দ্রের সাথে লড়াই করে প্রচুর অর্থ এই সংসদীয় এলাকার উন্নয়নে খরচ করেছি। যাতে আপনারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।

তৃণমূল কংগ্রেস এমন একটি দল, যাতে যেই হোক না কেন, কোনও অন্যায় করে থাকলে তার বিরুদ্ধে দল সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। এমনকি তাকে দলের সমস্ত পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও নেতার বিরুদ্ধে কারও যদি কোনও অভিযোগ থেকে থাকে, সরাসরি আমাকে জানাবেন। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি আপনাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে। যাতে আপনাদের কোনও অসুবিধা না হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সততার প্রতীক। আমরা যাঁরা দল করি, তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মানুষের সেবায় নিযুক্ত থাকি।

আপনাদের কোনও ভয়ের ব্যাপার নেই। দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সামনের লোকসভা নির্বাচন প্রত্যেকে নিজ নিজ বুথে লক্ষ্য রাখবেন। যাতে কোনও বহিরাগত এসে কোনও রকম অশান্তি পাকানোর চেষ্টা না করতে পারে। এরকম কারও প্রতি যদি সন্দেহ হয়, সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তৎক্ষণাৎ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়তে পারেন।