এসএসকেএম-এ প্রভাবশালী অপরাধীদের ভর্তি নিয়ে জবাব তলব হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি, ৪ জানুয়ারি: এবার বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত প্রভাবশালীদের SSKM-এ দীর্ঘদিন অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এজন্য আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্যের উচ্চ আদালত। পাশাপাশি, আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে ওই অভিযুক্তদের শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

এবিষয়ে আজ দুটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় এই নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। প্রশ্ন তোলা হয়, বিভিন্ন অভিযোগে কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হওয়া প্রভাবশালীদের মাসের পর মাস সেখানে কী চিকিৎসা চলছে? এই বিতর্ক জোরালো হয় কালীঘাটের কাকু সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের এই হাসপাতালে ভর্তি থাকা নিয়ে। মামলাকারী রমাপ্রসাদ সরকার অভিযোগ করেন,”সাধারণ মানুষ বেড পাচ্ছে না, অথচ কালীঘাটের কাকু প্রায় ৪ মাস ধরে বেড দখল করে রেখেছেন।”

মামলাকারীর আইনজীবি আদালতে অভিযোগ করেন, রাজ্যের যেসব প্রভাবশালী অপরাধী জেলে যাচ্ছেন, যখন ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সী জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, তখন এইসব অপরাধীরা জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে অসুস্থতার ভান করছেন। এবং চিকিৎসার নামে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এড়াবার চেষ্টা করছেন। এসএসকেএম হাসপাতাল কার্যত দুর্নীতিগ্রস্তদের আশ্রয়স্থল হয়ে গেছে।


প্রসঙ্গত মদন থেকে শোভন, সুজয়কৃষ্ণ থেকে পার্থ ও অনুব্রত; একে একে বহু প্রভাবশালী এসএসকেএম-এ ভর্তি হয়েছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় নন্দীগ্রামের প্রচার থেকে সটান চলে আসেন এসএসকেএম-এ। সেবার নিজের পায়ের চোটের চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী পূর্ব মেদিনীপুরের কোনও হাসপাতালকে ভরসা করেননি।

এবিষয়ে দুই মামলাকারী অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের জন্য বরাদ্দ বেড ও কেবিন অভিযুক্ত আসামিরা দখল করে রেখেছে। সাধারণ মানুষের চিকিৎসার অধিকার সুনিশ্চিত করতেই আদালতে এই আবেদন করেন মামলাকারীরা। তাঁরা বলেন, মাসের পর মাস অভিযুক্ত আসামিদের কী চিকিৎসা চলছে, তা প্রকাশ্যে আসছে না। বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করুক আদালত।

এরপরই আজ বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। অপরাধীদের দীর্ঘদিন হাসপাতালে রাখার ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম মানা হয়েছে কিনা, এই ধরণের প্রভাবশালী রোগীর সংখ্যা কত? তা জানতে চেয়েছে আদালত। পাশাপাশি, এইভাবে হাসপাতালে থাকা অভিযুক্তদের শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে বলা হয়েছে।