পুজোর সময় বিশেষ সুরক্ষা , বাড়ছে কোচের সংখ্যা –  উৎসবের দিন গুলোতে একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিচ্ছে পূর্ব রেল 

আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছে, বিচারের দাবিতে সোচ্চার আমজনতা।  সেই আবহেও বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব আসন্নপ্রায়। সে কথা মাথায় রেখে বড় পদক্ষেপ করছে পূর্ব রেল। কারণ প্রতি বছরই বিভিন্ন জেলা থেকে বহু মানুষ কলকাতায় প্রতিমা দর্শনে বেরিয়ে পড়েন । লোকাল ট্রেন থেকে শুরু করে  মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনেও উপচে পড়ে ভিড়। মানুষের এই ভিড় সামাল দিতে শিয়ালদহ ডিভিশনে মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনে জেনারেল কোচের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে রেল।  একই গুরুত্ব দিয়ে মাথায় রাখা হয়েছে যাত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দিকটিও।

পুজোর সময় একগুচ্ছ ব্যবস্থা নিচ্ছে পূর্ব রেল। ৯ থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত পুজোর দিনগুলোতে শিয়ালদহ শাখার গ্যালপিং ট্রেনগুলো সমস্ত স্টেশনে থামবে। ট্রেন চলাচলের দিকে বাড়তি নজর রাখবে রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের ট্র্যাকের ১০ থেকে ২০ মিটারের দূরত্বের মধ্যে যে সমস্ত প্যান্ডেল গুলো থাকবে, সে সব জায়গায় মোতায়েন থাকবে রেল সুরক্ষা বাহিনীর বিশেষ ফোর্স। শিয়ালদহ শাখার বিভিন্ন জায়গায় রেল লাইনের ১০-২০ মিটারের মধ্যে অন্তত ৫০টি পুজো মণ্ডপ রয়েছে। লাইনের ধারে তৈরি এই সমস্ত প‌্যান্ডেলে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবে রেল সুরক্ষা বাহিনী। তাদের সহযোগিতা করবে স্থানীয় থানার পুলিশ। স্থানীয় থানা, হাসপাতাল, দমকলের জরুরি নম্বরও থাকবে। এছাড়াও শিয়ালদহ , দমদম, কলকাতা স্টেশনের মত স্টেশনগুলিতে থাকবে সাহায্যকারী বুথ। উৎসবের দিনগুলোতে  জিআরপি-এর সহযোগিতায় মহিলা, শিশু ও প্রবীণ নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ট্রেনের জন্য আরপিএফ এসকর্ট থাকবে।

 শিয়ালদহ স্টেশনে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত ট্রলি চলাচল বন্ধ রাখা হবে। একইসঙ্গে শিয়ালদহে অতিরিক্ত ৫ টি টিকিট কাউন্টার খোলা হবে। এরমধ্যে ৪টি  শিয়ালদহ মেন এবং একটি শিয়ালদহ সাউথ সেকশনে খোলা থাকবে।  প্রত্যেকটি স্টেশনে বাড়তি আলোর ব্যবস্থা করা হবে । বিশেষ নজর দেওয়া হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে। যাত্রীদের যাতায়াতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয় তাই স্টেশনের রাস্তায় কোনও নির্মাণ সামগ্রী রাখা যাবে না বলে পূর্ব রেলের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুজোর সময় স্টেশনগুলোতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে। সব স্টেশনে পর্যাপ্ত সংখ্যক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র থাকবে।পুজোর দিনগুলোতে সব স্টেশনে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে।

শিয়ালদা, বিধাননগর, দমদম, নৈহাটি, বালিগঞ্জ, সোনারপুর, কলকাতা, কাঁচরাপাড়া, ব্যারাকপুর, মাঝেরহাট, কৃষ্ণনগরের মতো স্টেশনে ট্রেন ইন্ডিকেশন বোর্ড ও প্যাসেঞ্জার অ্যাড্রেস ব্যবস্থা বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে সিদ্ধাব্ত নেওয়া হয়েছে আধিকারিকদের বৈঠকে। এদিকে সব স্টেশনে ২৪ ঘণ্টা মিলবে পানীয় জল। শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রলি চলাচলে বিধিনিষেধ-সহ নানা ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হচ্ছে।


রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য প্রশাসনের পরামর্শ অনুসারে বিসর্জনের সময় সার্কুলার রেলওয়েতে ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। শিয়ালদহ, দমদম, নৈহাটি, বারাসাতের মতো বড় স্টেশনে অসুস্থ যাত্রীদের যত্ন নেওয়ার জন্য চিকিৎসক এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফ উপস্থিত থাকবে। অন্যান্য অনেক স্টেশনেও ফার্স্ট এইড বক্স, স্বাস্থ্য ইউনিট এবং প্যারামেডিক্যাল স্টাফ থাকবে। বিকেল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত স্কাউট, অ্যাম্বুলেন্স এবং সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের নিয়োগ করা হবে। 

পুজোর সময় বারসাত, খড়দহ, বালিগঞ্জ, বারাকপুর, সোনারপুর, বনগাঁ, বারুইপুর, রানাঘাট ও বহরামপুর স্টেশনের লেভেল ক্রসিং সামলানোর দায়িত্বে থাকবে আরপিএফ। দর্শনার্থীদের সহযোগিতার জন্য থাকবে ভলান্টিয়ার্সরাও। শিয়ালদহ, বিধাননগর, দমদম, নৈহাটি, বালিগঞ্জ, সোনারপুর, কলকাতা, কাঁচরাপাড়া, ব্যারাকপুর, মাঝেরহাট, কৃষ্ণনগর প্রভৃতি স্টেশনে ট্রেন সম্পর্কিত সময়সূচি ও ঘোষণায়  বিশেষ নজর রাখা হবে।