করোনা পরিস্থিতিতে যাঁরা সামনের সারিতে থেকে লড়াই করছেন, সেইসব ফ্রন্টলাইনারদের প্রথম থেকেই কোভিড যোদ্ধার মর্যাদা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যুদ্ধে কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং আক্রান্ত হলে এক লক্ষ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থাও চালু ছিল।
বুধবার কোভিড যোদ্ধাদের জন্য বিশেষ সম্মান, স্বীকৃতি ও একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির কথা ঘোষণা করলেন মমতা। বুধবার কোভিড যোদ্ধাদের মানপত্র এবং মেডেল দিয়ে বিশেষভাবে সম্মানিত করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কোভিড লড়াইতে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের কোনও একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও সরকারিভাবে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকর্মী থেকে শুরু করে সিভিক ভলান্টিয়ার যে কোনও কোভিড যোদ্ধার ক্ষেত্রে এই ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে জানান তিনি।
কোভিড যোদ্ধাদের সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপর সাংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণার পরপরই ১৩টি জেলা থেকে চিহ্নিত করা কোভিড যোদ্ধাদের নামের তালিকা অনুযায়ী মেডেল ও সার্টিফিকেট দিয়ে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, এই রাজ্যে মোট ২৬৮ জন পুলিশকর্মী করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন। ৩০ জন চিকিৎসক কোভিড-এর শিকার হয়েছেন চিকিৎসা করতে গিয়ে। আক্রান্ত নার্সের সংখ্যা ৮০ জন। ৬২ জন সরকারি কর্মচারি আক্রান্ত হয়েছে করোনায়।
সব মিলিয়ে ৪১৫ জন কোভিড যোদ্ধা সংক্রামিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪০৩ জন। বাকি ১২ জন মারা গিয়েছেন। এদিন মমতা সকলের কাছে অনুরোধ করেন ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলতে, জমায়েত যাতে না হয় সেজন্য নজর রাখতে।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে মহামারী চলছে। ম্যাজিক করে আটকাতে পারব না। তবে সচেতন হলে করোনা অনেকটাই রোখা সম্ভব। আগামীদিনে করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ফলে হয়তো করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাটা অঙ্কের হিসেবে আরও বাড়বে। কিন্তু তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।
রাজ্যের ক্লাবগুলিকেও করোনার বিরুদ্ধে নজর রাখতে অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা নোংরা রাজনীতি করার সময় নয়। এই যুদ্ধ কারো একার নয়, সবার যুদ্ধ। সেইসঙ্গে এদিন ফের কেন্দ্রকে দুষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্রের কাছ থেকে এখনও কোনও টাকা পাওয়া যায়নি।