বুধবারের পর ফের বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীকে ভর্ৎসিত হতে হল। এবার তাঁকে ভর্ৎসনা করলেন নিম্ন আদালতের বিচারক। বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের জামিন মামলার শুনানি ছিল। বিচার ভবনের বিশেষ সিবিআই আদালতের ১ নম্বর এজলাসে আয়োজিত শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীকে নিম্ন আদালতের বিচারক বলেন, ‘আপনি বেঞ্চ নিয়ে এত ভাবছেন কেন? আপনি শুধু শুধু আদালতের সময় নষ্ট করছেন। কোন আদালতে মামলা থাকবে, সেটা আপনি ঠিক করবেন না।’
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে পার্থকে গ্রেপ্তার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সাধারণত কলকাতার বিচার ভবনে ইডির মামলা চলে। অপরদিকে সিবিআইয়ের মামলা চলে আলিপুরের কোর্টে। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থর বিরুদ্ধে ইডি ও সিবিআইয়ের মামলার ধরণ একই রকম হওয়ায় ইডির আবেদন ছিল, সিবিআইয়ের করা মামলাটিরও শুনানি হোক বিচার ভবনে। সেই আবেদন মেনে নেওয়া হয়। বিচার ভবনে একই এজলাসে পার্থর বিরুদ্ধে দুটি মামলারই শুনানি শুরু হয় । পরবর্তীকালে ইডির মামলাটি অন্য এজলাসে চলে যায়। সিবিআইয়ের মামলাও ওই এজলাসে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিচার ভবনে আবেদন করা হয়।
ইতিমধ্যে পার্থকে গ্রেপ্তার (শোন অ্যারেস্ট) করে সিবিআই। সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন চেয়ে বিচার ভবনে আবেদন করেন পার্থ। আদালতের তরফে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিচার ভবনের বিশেষ সিবিআই আদালতের ১ নম্বর এজলাসে জামিনের মামলাটি শোনার আবেদন জানান পার্থের আইনজীবী। তাঁর যুক্তি ছিল, ইডির আর্জি মেনে সিবিআইয়ের মামলাটি অন্য আদালত বা এজলাসে স্থানান্তরিত না হওয়ায় ১ নম্বর এজলাসেই তা শোনা হোক। এরপরই পার্থর আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে জামিন মামলার শুনানি চলাকালীনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করা হয়েছিল। পার্থের আইনজীবী মুকুল রোহতগি নিজের মক্কেলের জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। তাঁর সওয়াল শুনে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ বলে, ‘আপনারা কী চাইছেন? আমরা সমাজকে কি বার্তা দেব যে, দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেরা জামিন পেয়ে যায়? আপাতভাবে এটা স্পষ্ট যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক জন দুর্নীতিগ্রস্ত লোক। কারণ তাঁর ঠিকানা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে।’ পাশাপাশি বিচারপতিদের কথায়, ‘অন্যদের সঙ্গে নিজের তুলনা টানার আগে একটু লজ্জা হওয়া উচিত। অন্যরা কেউ মন্ত্রী ছিলেন না। উনি শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। বাকিরা ওঁর জন্যই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত।’