• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পদ্ম শিবিরে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়

সবুজ পােশাক পরেই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন শােভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলে বিজেপির সদর দফতরে।

বিজেপিতে যোগ দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। (Photo: IANS)

সবুজ পােশাক পরেই গেরুয়া শিবিরে নাম লেখালেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিকেলে বিজেপির সদর দফতরে।

এক মঞ্চে দেখা গিয়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডা, রাজ্য বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, মুকুল রায়, শােভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

এই মঞ্চেই আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্ম শিবিরে যােগদান করেন একদা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্ব সৈনিক শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের গেরুয়া সবুজ উত্তরীয় পরিয়ে দলে স্বাগত জানান মুকুল রায়।

শােভন চট্টোপাধ্যায়ের দল বদল নিয়ে গুঞ্জন চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। উল্লেখযােগ্যভাবে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মন্ত্রী ও মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দেন শােভনবাবু। একরকম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া কলকাতার প্রাক্তন মেয়র যােগ দিতে পারেন বিজেপিতে এমন আশঙ্কা অবশ্য ইতিমধ্যেই করেছিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

এমনকি কিছুদিন আগেই শােভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এই সাক্ষাৎকারেও কার্যত ‘চিড়ে ভেজেনি’। এমনকি মঙ্গলবার বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন শােভন।

এছাড়াও বিধানসভার মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দেন তিনি। এই ইস্তফা দেওয়ার পর শােভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যােগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে জ্বল্পনা আরও বাড়ে।

এদিকে এই সব জল্পনা চলাকালীনই মঙ্গলবার রাতে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া শিবিরে যােগদান করতেই তাঁদের দিল্লিযাত্রা এটা একপ্রকার তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বুধবার ৩ টা ২৫ মিনিট নাগাদ নিজেদের হােটেল থেকে বেরিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপির কার্যালয়ের দিকে রওনা দেন শােভন-বৈশাখী।

যদিও সেখানে তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন বান্ধবী দেবশ্রী রায়ের উপস্থিতি অস্বস্তিতে ফেলে শােভন চট্টোপাধ্যায়কে, সূত্রের খবর এমনটাই। তবে তাঁর যােগদান মঞ্চে উপস্থিত থাকবেন না দেবশ্রী রায়, শােভন চট্টোপাধ্যায়কে এব্যাপারে আশ্বস্ত করেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

এরপরই আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্ম শিবিরে নাম লেখান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কানন। প্রসঙ্গত ব্যক্তিগত জীবন এবং বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্কের প্রভাব পড়েছিল শােভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে, এমনটা মনে করা হয়।

এদিন গেরুয়া শিবিরে শােভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যােগ দেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। উল্লেখযােগ্যভাবে বিজেপিতে যােগ দেওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে আক্রমণাত্মক হতে দেখা যায়নি শােভন চট্টোপাধ্যায়কে। যদিও পঞ্চায়েত ভােটে বিরােধীদের বাধা দেওয়া হয়েছে তা স্বীকার করেন তিনি।

তাঁর কথায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তিনি বলেছিলেন যা হচ্ছে তা ঠিক হচ্ছে না। পাশাপাশি নিজের বিজেপিতে যােগদান প্রসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি এই মুহুর্তে ইতিবাচক শক্তির সঙ্গে চলতে চান।

শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যােগদান প্রসঙ্গে মুকুল রায় জানান, ৩৪ বছর ধরে জনপ্রতিনিধি ছিলেন শােভন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলে ছিলেন তিনি। তাঁর দলে আসায় বিজেপির সুবিধা হল বলেও মন্তব্য করেন মুকুল।

উল্লেখযােগ্যভাবে একদা তিনটি দফতরের দায়িত্বে থাকা শোভন চট্টোপাধ্যায় দীর্ঘ দিন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলায় সংগঠনের দায়িত্ব সামলেছেন। ফলে তাঁকে বিজেপিতেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

শােভনের বিজেপিতে যােগদানের পর মুকুল রায় বলেন, এর ফলে বাংলায় বিজেপি লাভবান হবে। আগামি বছর কলকাতা পুরসভার নির্বাচন আমরা জিতছি। আজা বিধানসভার ভােট হলেও তৃণমূল বিরােধী দলের মর্যাদাও পাবে না। এর প্রতিক্রিয়া কলকাতার মেয়র ফিরাদ হাকিম মুকুলকে কটাক্ষ করে বলেন, যিনি জীবনে কোনওদিন নির্বাচনে লড়ার সাহস দেখাননি তাঁর মুখে নির্বাচনের জয় পরাজয়ের কথা শােভা পায় না। পাগলে কি না বলে ছাগলে কি না খায়।