চাকরি হারিয়ে অর্থ কষ্টের জেরে মাকে খুন করে। ছেলে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এমনই অনুমান পুলিশের। এমনি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে পাটুলিতে।
পাটুলি থানার অন্তর্গত পি ৩৬ কানুনগাে পার্কের একটি বাড়ি থেকে পচা দুগন্ধি বেরােচ্ছে। এমনি খবর আসে পাটুলি থানার কাছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখতে পায় লােহার কোলাপসিবল গেটের ভিতর একজন বয়স্ক মহিলা পড়ে রয়েছেন। তার গায়ের উপর পোকা বাইছে। এই দৃশ্য দেখে চমকে ওঠে পুলিশ এবং সেখানে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকেই পুলিশ জানতে পারে ওই বৃদ্ধার নাম মঞ্জুশ্রী মিত্র ( ৮৮ )। তখনই পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে আরও জানতে পারে ওই মহিলার এক ছেলে তার সঙ্গেই থাকত। তাকেও কিছুদিন ধরে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তখনই পুলিশ প্রথমে লােহার গেট ভেঙে বাড়িতে ঢােকে এবং ছেলের খোঁজ করতে শুরু করে।
এই সময় পুলিশ দেখতে পায় ওই দু’তলা বাড়ির একতলাতে শােয়ার ঘরে একটা পুরুষের পচাগলা মৃতদেহ বিছানার চাদরের ফাঁস দেওয়া অবস্থাতে সিলিং থেকে ঝুলছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা দুটো মৃতদহেকেই সনাক্ত করেন।
তিনি জানান, পুরুষের মৃতদেহটি ওই বৃদ্ধার ছেলে শুভময় মিত্রের ( ৫০ )। ওই স্থানীয় বাসিন্দাই জানান মৃত সুভময় মিত্রের বাবা স্নেহময় মিত্রের লেক মার্কেটে একটি ভাড়ার বইয়ের দোকান ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর সম্প্রতি ওই দোকানটিও সুভময়ের হাতছাড়া হয়ে যায়। লকডাউনের পর ওদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। খাবার এবং ওষুধ কেনার টাকাও ছিল না মা ও ছেলের। মাস তিনেক কেএমসিতে চুক্তি ভিত্তিক লেবারের কাজ করছিলেন সুভময়। তিনি খুব মানসিক চাপের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন বলে স্থানীয় মানুষ সুত্রের খবর।
আর এই কারণেই মানসিক চাপে পড়ে সুভময় এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের। জানিয়েছেন মঞ্জুশ্রী দেবী সাধারণত বাড়ির বাইরে খুব একটা বেরােতেন না। আর ছেলে সুভময়কেও গত সাতদিন ধরে এলাকার কোনাে লােকই দেখেনি। তারপর তাদের বাড়ি থেকে এই দুর্গন্ধ বেরােতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। পাটুলি থানার পুলিশ মামলা শুরু করে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার পর বাড়িটিকে সিল করে দিয়েছে পুলিশ।