লেক গার্ডেন্স গুলি কান্ডে উদ্ধার সুইসাইড নোটকে ঘিরে ধন্দে কলকাতা পুলিশ
নিজস্ব প্রতিনিধি– লেক গার্ডেন্স গুলি কান্ডে ইতিমধ্যেই নিহত রাকেশের সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী আধিকারিকেরা৷ পুলিশ সূত্রে খবর, তাতে মিলেছে একাধিক অসঙ্গতি৷ উদ্ধার হওয়া তিন পাতার সুইসাইড নোটে মৃতু্যর জন্য প্রাক্তন প্রেমিকা নিক্কুকুমারীর জীবনে ‘নবাগত’র উপস্থিতিকেই দায়ী করেছে যুবক৷ অন্যদিকে আহত নিক্কুকে ছাড়া ‘বাঁচব না’ বলেও লেখা রয়েছে উদ্ধার হওয়া নোটে, বলেই খবর পুলিশ সূত্রে৷ শুধু তাই নয়, বজবজ থানায় নিজেদের ‘আত্মহত্যা’র কথা আগাম জানিয়ে এসেছিল নিহত রাকেশ বলেই উল্লেখ রয়েছে উদ্ধার হওয়া নোটে৷ একই সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়েও আলকপাত করেছে যুবক৷ যাদিও তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারী আফিসারেরা৷ পুলিশ সূত্রে খবর, সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, ‘‘গঙ্গাধরের কাছ থেকে বন্ধুক পেয়েছিলাম৷’’ তবে এই গঙ্গাধর কোনও ব্যক্তি নাকি গঙ্গার ‘পাড়’, তা নিয়েও ক্রমশ রহস্য ঘনাচ্ছে বলেই খবর পুলিশ সূত্রে৷
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর দুটো নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার লেক গার্ডেন্সের এক হোটেলে এসে ওঠে বজবজের ওই যুগল৷ হোটেল সূত্রে খবর, বেশ কিছুক্ষণ ধরে দুজনের মধ্যে বচসা হয়৷ যার সূত্রপাত, তরুণীর নতুন সম্পর্ককে ঘিরেই৷ তারপর বিকেল ৪টে ৫০ নাগাদ ভেসে আসে প্রথম গুলি চলার আওয়াজ৷ প্রথমগুলি লাগে তরুণীর উরুতে৷ রক্তাক্ত অবস্থায় তেতলার ঘর থেকে নিচে নেমে হোটেল কর্তৃপক্ষকে সব বলার পরেই চলে আরও একটি গুলি৷ তাতেই শেষ হয়ে যায় রাকেশের প্রাণ৷ আহত তরুণীর কথায়, তাঁর মাথায় গুলি করতে চেয়েছিল যুবক৷ তা বুঝতে পেরেই পালিয়ে আসতে চান নিক্কু৷ তখনই গুলি লাগে তাঁর উরুতে৷ তার পরেই নিজেকে শেষ করে দেয় রাকেশ৷
তবে এই প্রথম নয়৷ পুলিশ সূত্রে খবর, এর আগেও ওই একই হোটেলে তাঁরা এসেছেন নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে৷ এদিন কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে আহত তরুণীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী অফিসাররা৷ তরুণীর অভিযোগ, মৃত রাকেশের সঙ্গে আসতে না চাইলে বারংবার পুরনো ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করত প্রাক্তন প্রেমিকাকে৷
যদিও এবার নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার জন্যই তরুণীকে ডেকে পাঠিয়েছিল যুবক৷ তবে পুলিশের অনুমান, তরুণীকে মেরে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রেখেছিল সিভিল ডিফেন্সের ভলিন্টিয়ার রাকেশ৷ সেই কারণেই নিজের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র এবং সুইসাইড নোট নিয়ে এসেছিল রাকেশ৷
অন্যদিকে নিহতের পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে এদিন কথা বলেন লালবাজারের তদন্তকারী অফিসাররা৷ তাতে উঠে এসেছে যুবকের মানসিক অবসাদের কথাও৷ পুলিশ সূ্ত্রে খবর, বিগত দু’মাস ধরে রাকেশের চরিত্রে বদল এসেছিল৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সাত বছরের সম্পর্কের ভাঙন মন থেকে মেনে নিতে পারেনি নিহত ওই সিভিল ডিফেন্স ভলিন্টিয়ার৷ যার প্রতিশোধ নিতেই প্রাক্তন প্রেমিকাকে লক্ষ্য করে গুলি করে রাকেশ৷