দু-অক্ষরের মিষ্টি শব্দ। পাখি। ছোট বড়াে মাঝারি নানা রঙের নানা নামের পাখি। বিচিত্র ডাক আর বিচিত্র প্রকৃতি নিয়ে খোলা আকাশের নিচে স্বাধীনভাবে উড়ে নাচে, গান করে নিজের ভাষায়। কখনওবা আমাদের চারপাশে কখনও বা ছাদের কিনারে অথবা গাছের ডালে। যুগে যুগে কত কবি কত কবিতা লিখেছেন এই পাখিদের নিয়ে।
ছোট পাখি, ছােটো পাখি / কিচিমিচি ডাকি ডাকি? কোথা যাও বলে যাও শুনি। কবি নবকৃষ্ণের জনপ্রিয় শিশু কবিতা। কবি জীবনানন্দ তাে পাখিদের নিয়ে নানান প্রশ্ন করেছেন। যেমন খঞ্জনেরা নাচে কেন তবে আর? ঝিঙা, বুলবুলি মে ওড়াওড়ি করে বনে? আবার আবালবৃদ্ধবনিতার কাছে সুপরিচিত কবিতা।
পাখি ডাকে ঘুমিয়ে পড়ি। পাখি ডাকে জাগি। কেবল শ্রুতিমধুর নয়। সুখপাঠ্যও বটে। এ হেন ছােট পাখিকুল আমাদের পরিবেস থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। বাড়ির আশেপাশে উড়ে বেড়ানাে টুনটুনির, চড়াই, এমনকি বাচ্চা শালিক পাখির বিলুপ্তি ঘটছে প্রতিনিয়ত সকলেরই অজান্তে।
ছােটো বড়াে মাঝারি সব শহরে এমনকি গ্রামে যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা মােবাইল টাওয়ারের অদৃশ্য চৌম্বক তরঙ্গে প্রথমে ছােটো পাখির ডানায় মরণক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে। পরে মারা যাচ্ছে। এ মত পাখি বিশেষজ্ঞদের।
পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ ছােটো পাখির ডানায় ক্ষত সৃষ্টি হয়ে মারণ রােগে মারা গিয়েছে। আমাদের পরিবেশ থেকে। সংখ্যাটা এখানেই থেমে নতুন নতুন মােবাইল টাওয়ারে বসানাের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মরার সংখ্যাটাও ক্রমশ বাড়ছে হু হু করে।
একটি গাছ, একটি প্রাণ আজ শুধু স্লোগান। গাছ কমছে, গাছের বদলে শহরে ও গ্রামের আনাচে কানাচে গজিয়ে উঠেছে নানা কোম্পানির সুউচ্চ আকাশ ছোঁয়া মােবাইল টাওয়ার। অদৃশ্য টাওয়ারের তরঙ্গে বড়াে বড়াে পাখিদের ক্ষতি অল্প হলেও ছােটো ছােটো পাখিরা সকলের অজান্তে মারা যাচ্ছে।
ছােটো পাখি যারা আমাদের আশেপাশে উড়ে বেড়ায় টুনটুনি, চড়াইয়ের মতাে পাখিরা। এছাড়া প্রজাপতি, ফড়িং মারা যাচ্ছে। হারিয়ে যাবে ছেটো পাখির দল। ছােটো পক্ষীকূল ’ বলে আগামী প্রজন্মের কাছে। কিছু থাকবে না। তারা জানবে না ছােটো পাখির কথা শুনতে পাবে না কিচির মিচির মিষ্টি আওয়াজ।