ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকেও রাজ্য বিধানসভা বিরােধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। আচমকাই ফের এই নেতা সংবাদের শিরােনামে। তবে, শুত্রার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বৈঠকের পর শুভেন্দু অধিকারী জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ দিয়ে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে হিসেব পেশ করেছেন।
বাংলার স্বার্থে কোনও বিরােধিতায় যেতে রাজি নই। কাজ করব একসঙ্গে মানুষের স্বার্থে। শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ বৈঠকে তার উপস্থিতি নিয়ে রীতিমতাে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এর আঁচ পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
তা সত্ত্বেও শুভেন্দু এদিন যেন অনেক বেশি নরম। কোনও ধরনের ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য তিনি করেননি। পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারী এবং তার পরিবারে রাজনৈতিক আধিপত্য যথেষ্ট রয়েছে। সেই গােটা পূর্ব মেদিনীপুর ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রধানমন্ত্রী হয়তাে সেকারণেই সবদিক খতিয়ে দেখেই বিধানসভার বিরােধী দলনেতাকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
একদিকে এই বৈঠক সরকারি হলেও নেপথ্যে রাজনীতির সূক্ষ চাল যে নেই, এমন নয়। শুভেন্দুকে বৈঠকে ডাকা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে আগেভাগেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সংসদের বিরােধী দলনেতা, যিনি এ রাজ্যের নির্বাচিত সাংসদ, সেই অধীর চৌধুরিকেও এদিনের বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানাে হয়েছিল।
কিন্তু সিবিআই ডিরেক্টর নির্বাচনের জন্য কয়েকদিন আগে দিল্লি যাওয়া অধীর চৌধুরি অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছেন, সে কারণে তার পক্ষে খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যে আসা সম্ভব নয়। সে কারণেই তিনি বৈঠকে থাকবেন না বলে আগেভাগেই জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর অফিসকে।
কিন্তু শুভেন্দুর উপস্থিতি বৈঠকে ভালােভাবে নেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমন বার্তা দেওয়া হয় নবান্ন থেকে বলা হতে থাকে, শুভেন্দু একজন বিধায়ক। সেই সঙ্গে একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় শুভেন্দু এখনও বিরােধী দলনেতার স্বীকৃতি পাননি।
এই খবর দিনের আলাে দেখতেই বিজেপির তরফ থেকে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বীকৃতি দেওয়া একটা কাগজ সামনে আনা হয়, তাতে দেখা যায় ১৯ মে বিধানসভার স্পিকার শুভেন্দুকে বিরােধী দলনেতার স্বীকৃতি হিসেবে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। এরপরেও বৈঠকে থাকতে রাজি হননি মমতা।
তিনি বৈঠকে হাজির না থাকলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে দেখা করে ‘ইয়াসে’ ক্ষতিগ্রস্তর জন্য একটি আর্থিক প্যাকেজ দাবিসংবলিত স্মারকপত্র তুলে দিয়েছেন। গতবছর আমফানের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বাংলা।
সেবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বঙ্গবিজেপির শীর্ষ নেতারা ছাড়াও এ রাজ্যের জন্য বিজেপির পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে থাকা নেতারা এ রাজ্যের জন্য দাবিদাওয়া পেশ করেছিলেন। সেই সঙ্গে যে প্যাকেজ কেন্দ্রের তরফে দেওয়া হবে, তা যেন সঠিকভাবে উপভােক্তারা পান, এই দাবি করা হয়েছিল।
কিন্তু এবার বঙ্গবিজেপির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে যােগাযােগ করে নরেন্দ্র মােদির সাক্ষাৎ প্রার্থনা করা হলেও এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সবুজ সংকেত পাননি বঙ্গবিজেপির নেতারা।