পদ্ম পতাকা এলোমেলো ভাবে সকালে উড়ছে। শীতের বিষণ্ণতা বেড়েছে বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। যদিও বিধানসভা ভোটের আগে এই ছবিটা অমিল ছিল বিজেপির রাজ্য কার্যালয়ে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল উলটপালট করে দিয়েছে এ রাজ্যে বিজেপির গতিপ্রকৃতি।
দলীয় কর্মী-নেতারা রীতিমতো হতাশ। এদিন পদ্মপতাকার মধ্যেও যেন ধরা পড়েছে সেই বিষণ্ণতার ছবি। এদিন সেটাকে টপকে উড়ল ঘাসফুলের জয়ধ্বজা।
৬ নম্বর মুরলিধর লেনে কার্যত একজন বিজেপি কর্মীরও দেখা মেলেনি। দরজা বন্ধই ছিল। বেলা বাড়তে সেখানেই উড়ল সবুজ আবির। বিজেপির রাজ্য অফিসের সামনে দিয়েই গেল তৃণমূলের বিজয় মিছিল।
সবুজ আবির খেলায় মাতলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। উচ্ছ্বসিত কর্মী-সমর্থকরা স্লোগান তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ। রাজ্য অফিসের সামনে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়ালেন তারা। আরও চড়ল সুর।
অপ্রীতিকর যাতে কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তাই আগেভাগেই সেখানে ছিলেন কয়েকজন পুলিশকর্মী। মিনিট খানেক দাঁড়িয়ে আবার বিজয় মিছিল এগিয়ে গেল সামনের দিকে। এঁদের স্বপ্ন ছিল বাংলা দখলের।
একুশের নির্বাচনে পুড়েছিল মুখ। তবে কলকাতার পুরনির্বাচনকে ঘিরে তখনও বুক বেঁধেছিলেন নেতৃত্ব। বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘পুরভোটে একেবারে নতুন করে লড়বে দল।’
কিন্তু মুখ থুবড়ে পড়ল সেখানেও। পর্যুদস্ত হতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। শহরজুড়ে পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার। উত্তর থেকে দক্ষিণে পুরভোটে বিরোধীদের কার্যত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম কোনও বিরোধী দলই পুরভোটে তৃণমূলের ধারেকাছে নেই। ইতিমধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ডের ফলও প্রকাশ হয়েছে। তৃণমূল শিবিরে চলছে সবুজ আবির খেলা। ১৩৪ ওয়ার্ডে জিতেছে রাজ্যের শাসক দল।
আসন সংখ্যার নিরিখে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে। তাদের দখলে ৩ আসন। নির্দল প্রার্থীরাও জয়ী হয়েছেন ৩ ওয়ার্ডে। আর দু’টি করে আসন পেয়েছে বাম ও কংগ্রেস। তবে কলকাতার বেশিরভাগ ওয়ােের্ডই বামেরা দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে।