সরস্বতী পূজার দিনেই বড়সড় ঘোষণা করে মতুয়াদের মধ্যে আলোড়ন ফেলে দিলেন বিজেপি নেতা ও বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া সমাজে তিনি পৃথক মতুয়া আচার সংহিতা চালু করতে চলেছেন। রবিবার বিধাননগরে ছিল গোটা দেশের মতুয়া সমাজের নেতাদের সঙ্গে ‘জাতীয় মতুয়া ধর্ম চিন্তন শিবির’। সেই শিবিরে মতুয়া সঙ্ঘাধিপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে নতুন এই ‘আচার সংহিতা’ তৈরি করা হবে। কিন্তু কী থাকছে মতুয়া মহাসঙ্ঘের এই ‘আচার সংহিতা’য়?
এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, নতুন এই সংহিতা অনুযায়ী, বিবাহ ও শ্রাদ্ধের মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠান মতুয়া সমাজের রীতি মেনেই করা হবে। অর্থাৎ হিন্দুত্বে থেকেও হিন্দু ধর্মের একাধিক নিয়ম বর্জন করা হবে বলে জানা গিয়েছে। যেমন হিন্দুধর্মের রীতি অনুযায়ী কন্যাদান, পিণ্ডদানের মতো একাধিক রীতি বর্জন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে নতুন এই সংহিতায়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘ।
রবিবার বিধানগরের এই চিন্তন শিবিরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তুনু ঠাকুর জানান, মতুয়া সমাজের জন্য ভিন্ন মতুয়া ‘সংবিধান’ রচিত হবে। মতুয়া মহাসঙ্ঘের পদাধিকারী ও গোসাঁইরা মিলে এই সংবিধান তৈরি করবেন। এরপর সেই সংবিধান বা ‘আচার সংহিতা’র আইনত মান্যতা আদায় করতে মতুয়া মহাসঙ্ঘ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে।
প্রসঙ্গত রবিবার সরস্বতী পুজোর প্রথম দিনে বিধাননগরে মতুয়া মহাসঙ্ঘের ‘জাতীয় মতুয়া ধর্ম চিন্তন শিবির’-এ দেশের ১২টি রাজ্যের হাজির হন। বিধাননগরের পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রেক্ষাগৃহে এই চিন্তন শিবিরের কার্যক্রম হয়। মতুয়া সমাজের এই সম্মেলনে সাত দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়। যা ধ্বনিভোটে পাশ হয়ে যায়। এই সাত দফা প্রস্তাবের মধ্যে অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল মতুয়া সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক ‘আচার সংহিতা’। জাতীয় মতুয়া সম্মেলনের এই প্রস্তাবের মান্যতা পেতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, রবিবার মতুয়া মহাসঙ্ঘের এই সম্মেলনে সাত দফা প্রস্তাব পেশ করেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের আপ্তসহায়ক তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের সক্রিয় কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস। সেই সাত দফা প্রস্তাবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘আচার সংহিতা’র বিষয়ে প্রথমে কোনও আলোচনা করা হয়নি। একেবারে শেষে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বলা হয়, বিবাহ ও শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের মতো ধর্মীয় আচার বা রীতি ঠিক কী হবে, তা মতুয়া মহাসঙ্ঘ একটি লিখিত আকারে প্রকাশ করবে।