কলকাতা, ২৯ ফেব্রুয়ারি: হাত থেকে বোয়াল মাছ ফসকে যেতে পারে। সেজন্য এতদিন শুরু হয়নি পদক্ষেপ। এবার গ্রেপ্তারির পরেই শুরু হল একের পর এক দলীয় পদক্ষেপ। শেখ শাহজাহানকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করল তৃণমূল। আজ গ্রেপ্তারির পর তাকে প্রথমে বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। সেখানে তদন্তের স্বার্থে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে চাওয়া হলেও আদালত ১০ দিনের হেফাজত দিয়েছে। পাশাপাশি, সন্দেশখালি কাণ্ডে শাহজাহানের তদন্তে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ বসিরহাট আদালতে তোলার সময় আদালত চত্বর কড়া পুলিশি পাহারায় ঘিরে রাখা হয়। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যে বসিরহাট কোর্ট লোক আপে রাখা হয়। আদালতে শুনানির পর তাকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়। এরপর সন্দেশখালির এই বেতাজ বাদশাকে সোজা ভবানী ভবনে নিয়ে আসা হয়।
শেখ শাহজাহান আজ স্বীকার করে নিয়েছে, গত ৫ জানুয়ারি সরবেড়িয়ায় তার বাড়িতে ইডির অভিযানের সময় ইডির ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছিলাম আমিই। গ্রেপ্তারির পর আদালতে এই অকপট স্বীকারোক্তি দেয় শেখ শাহজাহান।
এদিন আদালতে মাত্র ১০ মিনিটের সওয়াল জবাব হয়। সেখানে শাহজাহানের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। তখনই শাহজাহান বলে, সাত সকালে কোনও নোটিশ ছাড়া ইডি-র আধিকারিকরা আমার বাড়িতে এসেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আমি গ্রেফতারির আশঙ্কা করে ভয় পেয়েছিলাম। তাই অনুগামীদের ফোনে ডেকে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার নির্দেশ দিই। তাদের জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিতে বলি।
উল্লেখ্য, এর আগে শাহজাহানের নির্দেশেই তাদের আধিকারিদের ওপর হামলা চলেছে বলে আগেই আদালতে জানিয়েছিল ইডি। ইডির তরফে আদালতে জানানো হয়, গত ৫ জানুয়ারির ইডির দল শাহজাহানের বাড়িতে পৌঁছনোর পর তৃণমূলি গুন্ডাকে ফোন করেন এক তদন্তকারী আধিকারিক। ইডির তরফে ফোন করা হয়েছে শুনেই ফোন কেটে দেন শাহজাহান। এরপর তার ফোনের কল লিস্ট পরীক্ষা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ইডি আধিকারিকের ফোন কেটে দেওয়ার পর নিজের ২টি ফোন থেকে ৩ মিনিটে ২৮টা ফোন করেছিল শাহজাহান। তার ১৫ মিনিটের মধ্যে সেখানে জড়ো হয়ে যায় প্রায় ৩ হাজার দুষ্কৃতী। ইডির দাবি ছিল, অনুগামীদের ফোন করে ইডির ওপর হামলা করার নির্দেশ দিয়েছিল শাহজাহান। এদিন আদালতে সেই অভিযোগ স্বীকার করে নিল শাহজাহান নিজেই।
এদিকে শেখ শাহজাহানের গ্রেপ্তারের পর তার আরও এক শাগরেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমির আলী গাজী নামে ওই ঘনিষ্ঠ সাগরেদকে ঝাড়গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে নারীদের ওপর অত্যাচার সহ একাধিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।