ধর্ষণ করে এক চিকিৎসকের মৃত্যুতে যখন রাজ্য তোলপাড় সে সময়েই এক তরুণীকে গণ ধর্ষনের ঘটনায় বর্ধমানে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর এই ঘটনায় দিল্লির নির্ভয়া কান্ড কয়েক বছর বাদে উসকে দিল। ছেলে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষনের শিকার হলেন এক বিশেষভাবে সক্ষম তরুণী। অভিযোগ তরুণীকে বাঁচাতে গেলে দুষ্কৃতীরা তাঁর বন্ধুটিকেও বেধড়ক মারধর করে। ঘটনার পর নির্যাতিতা তরুণীর পরিবারের পক্ষ থেকে বর্ধমান মহিলা থানায় অভিযোগ জানানোর পর পুলিশ শক্তিগড় থেকে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। বিচারক আসামিদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, ৭ আগস্ট, বুধবার বর্ধমানের নবদ্বীপ রোডের একটি জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিলেন ওই নির্যাতিতা। তিনি আংশিক প্রতিবন্ধী। তাঁর সঙ্গে একজন ছেলে বন্ধুও ছিলেন। সেইসময় তিনজন দুষ্কৃতী তাঁদের এসে ঘিরে ধরে। ‘আপত্তিকর ‘ অবস্থায় ওই যুগলকে পাওয়া গেছে, এই অজুহাতে তাঁদের কাছে টাকার দাবি করতে থাকে দুস্কৃতীরা। তাঁদের কাছে টাকা নেই জানানোর পর মেয়েটিকে নিগ্রহের চেষ্টা করা হয়। ছেলেটি বাধা দেবার চেষ্টা করলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, এইসময় মেয়েটিকে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে। এই ঘটনার তিনদিন পরে ঘটনার আতঙ্ক কাটিয়ে নির্যাতিতা বাবা মাকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমান মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং তোলাবাজির অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তিন অভিযুক্তকে বর্ধমানের শক্তিগড় থেকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের নাম তাপস পন্ডিত, সজল ঘটোয়াল এবং বিক্রম মালিক। ইতিমধ্যে নির্যাতিতা মেয়েটির জবানবন্দী এবং মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাটি ৭ তারিখের হলেও ১০ তারিখ অভিযোগ হয়েছে। মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের হবার পর পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি শক্তিগড়, দেওয়ানদিঘি ও বর্ধমান থানাকে তৎপর করা হয়। রাতেই অভিযুক্ত তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সুপার আমনদীপ আরও জানিয়েছেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মেয়েটিকে গণধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। ছেলেটিকেও তারা মারধর করে। তিনি জানান, অভিযুক্তদের টি আই প্যারেড করানো হবে। ঘটনার তদন্তের স্বার্থে একটি স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা ফার্স্ট ট্রাক ট্রায়াল শুরু করতে চাই। যাতে গুরুতর এই অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।’