মহালয়ার দিনেই তর্পণ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ডাক্তারদের সম্মিলিত সংগঠন ‘জয়েন্ট ডক্টরস ফোরাম’। সেই কর্মসূচি শুরুর আগে রবিবারেই রাজ্যজুড়ে রাস্তায় নামলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিন সন্ধ্যাতেই কলকাতার রাজপথে মশাল হাতে সাতটি মিছিল বের করেন তাঁরা। ১ অক্টোবর, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর মামলার শুনানি। ঠিক তার আগের দিন এই মিছিলে শুধু কলকাতা শহরে নয়, বিভিন্ন জেলাতেও আন্দোলনে পা মিলিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সুপ্রিম কোর্টে শুনানির আগে পড়ুয়া ডাক্তারদের এই মিছিলে সাড়া দিয়েছেন সাধারণ মানুষও। মূলত রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে তাঁদের এই প্রতিবাদ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, প্রথম দফার আন্দোলনে জুনিয়র ডাক্তাররা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এবার তাঁদের আন্দোলনের অভিমুখ কেন্দ্র সরকার ও সিবিআই। এজন্য আগেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত তাঁরা মিছিল করেন। গত শুক্রবার জুনিয়র ডাক্তারদের গণ কনভেনশন হয়। সেখানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মতামত গ্রহণ করা হয়। এরপর আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা তৈরি করা হয়। রবিবার এই মশাল মিছিলের পর মহালয়ার দিন মহা মিছিলে সামিল হবেন আন্দোলনকারী ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার সহ প্রায় এক লক্ষ মানুষ। সেই মিছিলে অংশ নেবে ডাক্তারদের জয়েন্ট ফোরামের সদস্যরা ছাড়াও ৫৫টি সামাজিক সংগঠন।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কালীঘাটে বৈঠক হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। কিন্তু তখনও তাঁরা কর্ম বিরতি প্রত্যাহার করেননি। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর নবান্নে গিয়ে মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পরে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্ম বিরতি তুলে নিলেও তাঁরা জানিয়ে দেন, আরজিকর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং ডাক্তার ও রোগীদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। গণকনভেনশনের মঞ্চ থেকে বেশ কিছু প্রতিবাদের কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই পরিকল্পনা মাফিক সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজিকর কাণ্ডের শুনানির আগের দিনেই সন্ধ্যায় মশাল হাতে রাস্তায় নামেন পড়ুয়া ডাক্তাররা।
এদিন শহরজুড়ে জুনিয়র ডাক্তারদের সাতটি মিছিলের মধ্যে একটি মেডিক্যাল কলেজ কলকাতা, অন্যটি এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু হয়। এই দুটি মিছিলেরই গন্তব্যস্থল ছিল এসপ্ল্যানেড। অন্যদিকে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের আরও একটি মিছিল বের হয়। এটির গন্তব্য ছিল পার্ক সার্কাসের সেভেন পয়েন্ট। একইভাবে সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডানলপ, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ থেকে শ্যামবাজার ফাইভ পয়েন্ট ক্রসিং এবং কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ থেকে যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মশাল মিছিল হয়।
মিছিলের সঙ্গে সঙ্গে বাজতে থাকে ড্রাম। মুখে তাঁদের একটাই স্লোগান ‘শোক নয়, দ্রোহ চায়’। মিছিলে পা মেলানো জুনিয়র ডক্তাররা দাবি করেন, তাঁদের মিছিলে সাধারণ মানুষও রয়েছেন। হাসপাতালে ডাক্তার ও রোগীদের নিরাপত্তার দাবিতে তাঁদের এই প্রতিবাদ চলতেই থাকবে। সেই সঙ্গে আরজি করে নির্যাতিত তরুণী চিকিৎসকের বিচারের দাবিতে তাঁদের এই আন্দোলন বলে জানিয়ে দেন।