স্মার্ট ফোনে যথেষ্ট সড়গড় নন। নেই মেট্রোরেলের স্মার্ট কার্ড। তাই ই-পাস বা মেট্রোর স্লট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়েন বরিষ্ঠ নাগরিকরা। লকডাউনের শেষে প্রায় ছয়মাস পর মেট্রোরেলে চড়তে গিয়ে সােমবার বেজায় বেকায়দায় পড়েন প্রবীন মানুষেরা। অনেকে অবশ্য ভেবেছিলেন রেলরক্ষীদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে হয়তাে কাজ হতে পারে। কিন্তু বিফল মনরথে তাদের মেট্রো ছেড়ে গন্তব্যে পৌছাতে অন্য যানবাহন খুঁজে নিতে হয়েছে। এমনই একাধিক ছবি বিভিন্ন স্টেশনে ধরা পড়েছে।
প্রথমদিন পাতালপথের যাত্রীদের অভিজ্ঞতা সবটাই নজরে রেখেছিলেন মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। আর সেইসব দিক বিচার বিবেচনা করেই এক বড়সড় সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার সকালেই ঘােষণা করে মেট্রোরেলের শীর্ষ আধিকারিকরা। প্রবীন নাগরিকদের কথা ভেবে এদিন মেট্রোরেলের তরফ থেকে এক বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বয়সের প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখলেই নির্দিষ্ট সময়ে মেট্রোরেলে যাতায়াতের সুযােগ পাবেন বরিষ্ঠ মানুষেরা।
মেট্রোরেলের সেই নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোভিড পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহনের মাপকাঠি বেধে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ যাত্রীরা ই-পাসের মাধ্যমে মেট্রোর স্লট বুকিংয় করে যাতায়াত করতে পারবে।
তবে প্রবীন মানুষদের কথা ভেবে তাঁদের জন্য মেট্রো পরিসেবায় বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বয়সের প্রমাণপত্র দেখিয়ে অনায়াসেই মেট্রোরেলে যাতায়াতের সুযােগ পাবেন তাঁরা। ই-পাসের প্রয়ােজন পড়বে না তাদের। মেট্রো স্টেশনে এসে প্যান, আধার, ভােটার কার্ড বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নাহলে পাসপাের্ট দেখালেই তাঁদের পাতালপথে যাত্রার সুবিধা মিলবে।
তবে অফিস টাইমে সেই সুবিধা থাকছে না। দিনের মধ্যে সাড়ে ১১ টা থেকে সাড়ে ৪ টে পর্যন্ত মেট্রোয় বিনা ই-পাসে শুধু পেপার টিকিট কেটে যাতায়াতের সুবিধা থাকছে প্রবীন নাগরিকদের।
সােমবার নামমাত্র যাত্রী নিয়ে মেট্রো চলাচল করলেও এদিন সেই চিত্রটা বেশ কিছুটা বদলেছে। হাতেগােনা নয় সকাল এবং সন্ধেয় অফিস যাত্রীদের সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মতাে। সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত ই-পাস বুকিংয়ের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। তবে প্রথমদিনের মতােই স্টেশনগুলিতে ভিড়ভাট্টা এড়াতে বাড়তি নজরদাড়ির ব্যবস্থা ছিল। গার্ডরেল দিয়ে স্টেশনের মুখেই পথে হাজির ছিলেন কলকাতা পুলিশের বাহিনী।
ভিতরে নিয়মমাফিক ভাবে যাত্রীদের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে সহযােগিতা করেন রেলরক্ষী ও মেট্রোর কর্মীরা। নির্ধারিত সময়ে রেলের রেকগুলিতে জীবানুনাশক স্প্রে করে সুরক্ষাবিধি বজায় রাখার কাজও চলে সমানতালে। ই-পাস বুক করতে পারছেন না যারা মেট্রোরেলের স্টেশনগুলির বাইরে হেল্পডেস্ক তৈরির আবেদন জানান তাদের মধ্যে অনেকেই। ক্রমশ ছন্দে ফিরছে শহর।