রথীন কুমার চন্দ
দাদার কীর্তির ট্র্যাজেডি নায়কের মাধ্যমে সেলুলয়েড জীবন সূচনা তাপস পালের। ট্র্যাজেডি নায়ক থেকে তার পেশাদারী জীবন উন্নীত হতে না পারলেও, ৪০০ সিনেমায় অভিনয় করার অভিজ্ঞতা তার ঝুলিতে ছিল।
বাংলা চলচ্চিত্র জগত উত্তমকুয়ার পরবর্তী খরা পুষিয়ে নিতে পেরেছিল তার ট্র্যাজেডি নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ের দক্ষতায়। দুটি জাতীয় পুরষ্কার তাপস পালের অভিনয় তথা পেশাদারী জীবনে এসেছিল। বাঙ্গালীর সুখ দুঃখের একান্ত নায়ক তাপস পাল সাধারণ থেকে সেলিব্রেটিতে পরিণত হন তপন সিংহের দাদার কীর্তির দৌলতে।
হাসি কান্না, ট্র্যাজেডির মূর্ত এক ও একমেবম নায়ক, যার মুখেই লেগে থাকত ট্র্যাজেডির সমস্ত প্রতিবিম্ব, যিনি বাঙ্গালীর এই হাসির বিপরীত দিকের একমাত্র প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন, যাকে ছাড়া সেলুলয়েডের ট্র্যাজেডি চরিত্র গুলো ভাবা যেত না, পরিচালকরা ভাবতে পারত না বা ভাবার সাহস করতেন না, তিনি হালেন একচ্ছত্র অভিনেতা তাপস পাল।
হুগলী জেলার চন্দননগরের তনয় তাপস পাল বাঙ্গালীর পেটেন্ট ট্র্যাজেডি নায়কে পরিণত হয়েছিলেন কালে কালে। এমনকি সিনেমার চিত্রনাট্য সেই এক গথে বাধা, সেই চেনা তাপস পাল সদম্বে দাপিয়ে বেড়াত। সেই চেনা ছন্দে অভিনেতা তাপস সেলুলয়েডের পর্দায় সাবলীল, স্বচ্ছন্দ ও সপ্রতিভ।
তিনি যে সমস্ত সিনেমায় অভিনয় করেছেন সবকটি দর্শকদের মনে হয়েছে চরিত্র গুলি শুধুমাত্র তার জন্য সৃষ্টি। প্রত্যেকটি চরিত্র পরিস্ফুটনে উত্তম পরবর্তী যুগে তার তুলনা জুড়ি মেলা ভার। দর্শকদের কাছে এই চরিত্র পরিস্ফুটনের কারণে এত আপন হয়ে উঠেছিলেন।
পেশাদারী জীবনে সাফল্যের সঙ্গে উতরে গেলেও রাজনীতিক জীবনে তিনি সাবলীল ছিলেন না। তিনি অভিনয়কে যতটা আত্মস্থ করতে পেরেছিলেন, রাজনীতিকে হজম করা তার পক্ষে অনেক অনেক গুণ শক্ত ছিল। পেশাদারী জীবন ট্র্যাজেডি দিয়ে শুরু আবার জীবনের যতি চিহ্ন পড়ল ট্র্যাজেডি দিয়েই। তাপস পালে জীবন্দীপ মাত্র ৬১ বছরে ইতি পড়ল।