• facebook
  • twitter
Saturday, 9 November, 2024

আজ শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা

আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলেছে ২০২০’র মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রস্তুত পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

প্রতিকি ছবি (File Photo: Indrajit Roy/IANS)

আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে চলেছে ২০২০’র মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রস্তুত পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সােমবার সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানালেন পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গাঙ্গুলি। 

জানা গিয়েছে, এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য রাজ্যের মােট ৪২টি ব্লকে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর। এর মধ্যে রয়েছে মালদা, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়ি জেলা সহ রাজ্যের আরও বেশ কিছু ব্লকে এই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। মূলত কোনও ভাবেই যেন প্রশ্নপত্র সােশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস না হয়ে যায় এবং নকল রুখতেই স্বরাষ্ট্র দফতরের এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে। তবে এনিয়ে পর্ষদ সভাপতি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। যদিও সোমবার তাঁর সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকও হয়েছে বলে সূত্রের খবর। 

এই বছর মােট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ১৫ হাজার ৮৮৮ জন। গত বছর যা ছিল ১০ লক্ষ ৪৯ হাজার ৫১৩ জন। প্রায় ৩৩ হাজার পরীক্ষার্থী কমে গিয়েছে আগের বারের তুলনায়। যদিও এর পেছনে প্রতি বছর পাশের হার উল্লেখযােগ্যভাবে বেড়ে যাওয়াকেই দায়ী করা হয়েছে পর্যদের তরফ থেকে। বিগত কয়েক বছরের মতােই এবারও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা উল্লেখযােগ্য ভাবে বেশি। এবার মােট ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ১৩০ জন্য বেশি ছাত্রী পরীক্ষা দেবে ছাত্রদের তুলনায়। এবছর মােট পরীক্ষা কেন্দ্রের সুংখ্যা ২৮৩৯টি। 

অন্যান্য বছরের মতাে এবারও ছাত্রছাত্রী এবং পরীক্ষকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মাবলী জারি করা হয়েছে পর্ষদের পক্ষ থেকে। যথা, পরীক্ষা কেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীরা মােবাইল ফোন, স্মার্ট ফোন, স্মার্ট ওয়াচ পরে ঢুকতে পারবে না। পাশাপাশি পরীক্ষকদের জন্যও এই একই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। তবে ছাত্রছাত্রীরা ব্যাগ নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকাতে পারলেও তাতে মােবাইল ফোন বা ওই জাতীয় দ্রব্য বহণ করা যাবে না। যদিও হলের বাইরেই ব্যাগ খুলে রেখে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে পরীক্ষার্থীরা। 

এবারও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে পর্ষদের তরফ থেকে যেকোনও সমস্যায় ছাত্রছাত্রীরা ফোন করতে পারবেন এখানে। কন্ট্রোল রুমের দুটি নম্বর হল ০৩৩ ২৩৫৯ ২২৬৪ এবং ০৩৩ ২৩৫৯ ১২৭৪।

আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য থাকবে মেডিকেল টিম। এছাড়া অসুস্থ ছাত্রছাত্রীরা যাতে হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে, তার জন্য করা হয়েছে একাধিক বন্দোবস্ত। 

কলকাতায় মেয়েদের স্কুলের জন্য নির্ধারিত সেন্টারগুলিতে থাকবে অতিরিক্ত ২ জন করে মহিলা পুলিশকর্মী। কলকাতা শহরে ১৮২টি মাধ্যমিকের সেন্টার রয়েছে। একজন করে পুলিশ আধিকারিকের দায়িত্বে থাকবে প্রতিটি সেন্টার। সঙ্গে থাকবেন ৩ জন কনস্টেবল বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা। এছাড়া রাস্তার মােড়ে মােড়ে বাইকে এবং বিশেষ গাড়িতে থাকবেন কলকাতা পুলিশকর্মীরা বলেও জানিয়েছেন তিনি। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের যে কোনও রকম সহায়তায় কলকাতা পুলিশ পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন খােদ নগরপাল অনুজ শর্মা। 

অন্যদিকে মাঝে কিছুদিন যান্ত্রিক গােলযােগ ঘটলেও ১০০ ডায়াল ফের চালু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের ওই শীর্ষ কর্তা। এছাড়া কলকাতা পুলিশের সাহায্যকারী অতিরিক্ত চারটি মােবাইল ফোন নম্বরও রয়েছে। এগুলি হল ৯৪৩২৬১০৪৪৩, ৯৪৩২৬১০৪৪৬, ৯৮৭৪৯০৩৪৬৫, ৯৪৩২৬২৪৩৬৫। এই নম্বরগুলিতে ফোন করা ছাড়াও হােয়াটস অ্যাপ পরিসেবা রয়েছে। প্রয়ােজনে মেসেজ করেও সাহায্য চাইতে পারেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার সময় জোরে মাইক বাজানাে বা যে কোনও প্রকারের সমস্যায় নির্ধিধায় কলকাতা পুলিশে ফোন করতে পারে পড়ুয়া ও তাদের পরিবার। অভিযােগ পাওয়া মাত্রই দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন নগরপাল অনুজ শর্মা। 

এছাড়া টালা সেতু বন্ধ থাকায় কলকাতার দিকে সংলগ্ন এলাকায় যে ১৭ টি স্কুলে মাধ্যমিকের সেন্টার রয়েছে সেখানে থাকবে বাড়তি পুলিশি নজরদারি। সেন্টারে পৌছানাের অন্য পথ নির্দেশিকা নিয়ে রয়েছে কলকাতা পুলিশের সােশ্যাল সাইটে। সেখানে সুনির্দিষ্ট ভাবে বাস রুট থেকে শুরু করে নিকটবর্তী মেট্রো স্টেশনের নাম সহ অন্যান্য পথ নির্দেশিকা সহ বিস্তারে জানানো হয়েছে। ট্রাফিক কিয়স্কগুলিতেও গিয়ে প্রয়ােজনীয় সাহায্য চাইতে পারেন পরীক্ষার্থী বা তাদের পরিজনেরা। কলকাতা পুলিশের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমেও শহরের সমস্ত সিসি ক্যামরার ওপর নজর রাখবেন পুলিশ আধিকারিকরা। পরীক্ষা কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ফোন ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন লালাবাজারের এক শীর্ষ কর্তা।