প্রাক্তন নগরপাল দুঁদে আইপিএস রাজীব কুমারের খোঁজে চিরুনি তল্লাশি সিবিআইয়ের। বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া অভিযান বৃহস্পতিবার চরমে পৌঁছায় যখন আচমকাই আলিপুরে আইপিএস কোয়ার্টারে তল্লাশি চালান সিবিআই গােয়েন্দারা।
এদিন এক এসপি পদ মর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে সিবিআই’র একটি দল আলিপুরে আইপিএস কোয়ার্টারে যায়। এরপর তা আরও একধাপ এগােয় কসবার একটি হােটেল রাজীবের খোঁজে সিবিআই অফিসারদের হানা দেওয়ার ঘটনায়। পাশাপাশি সিবিআই’র একটি দল এদিন রাজীব কুমারের বাসভবনে গিয়ে সিআরপিসির ১৬০ ধারায় ফের নােটিশ ধরায়। রাজ্যের গােয়েন্দা প্রধান রাজীব কুমারের নাগাল পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সিবিআই।
একদিকে যেমন আইনি লড়াইয়ের জন্যে তৈরি কেন্দ্রীয় গােয়েন্দারা, তেমনই রাজীবকে পেতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও চালানাে হচ্ছে। এদিন নতুন করে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে ফের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। অন্যদিকে পার্কস্ট্রিটে রাজীব কুমারের বাসভবনে গিয়ে হাজিরা দেওয়ার জন্য এদিন দ্বিতীয় নােটিশ ধরানাে হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ডিজিকে পাঠানাে ওই চিঠিতে কেন্দ্রীয় গােয়েন্দারা জানতে চেয়েছেন এডিজি (সিআইডি) রাজীবকুমারের সঙ্গে কী ভাবে যােগাযােগ করা যাবে? কোন ফোন নম্বরে তাকে পাওয়া যাবে? এ নিয়ে তিনটি চিঠি পৌঁছাল ডিজি’র কাছে। এখানেই থেমে থাকেনি কেন্দ্রীয় গােয়েন্দা সংস্থা। সিবিআইয়ের চারটি দল এ দিন সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়।
বুধবার বারাে জনের যে বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল সেই দলই আজ চার ভাগে ভাগ হয়ে ওই তল্লাশি অভিযানে নামে। ঘটনাচক্রে এ দিনই দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার পরেই কলকাতায় রাজীবের খোজে তৎপরতার বাড়ে।
এদিন বেলা দুটো নাগাদ সিবিআই’র একটি দল আলিপুর আইপিএস কোয়ার্টারে প্রায় ৪৫ মিনিট থাকার পর যায় রুবির মােড়ে বাইপাসের ধারে এক বিলাসবহুল হােটেলে। সেখানকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশির পাশাপাশি গােয়েন্দারা যান হােটেলের রান্নাঘরেও। হােটেলে যখন সিবিআই তল্লাশি চলছে বাইরে তখন কলকাতা পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানাে হয়।
পরে ওই হােটেলের এক পদস্থ কর্মী জানান, সিবিআই অফিসাররা কেন এসেছিলেন তা তিনি জানেন না। রাজীব কুমার সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, কে রাজীব কুমার? উল্লেখ্য, রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করতে মরিয়া সিবিআই এদিন কলকাতা শহরের মােট ছয়টি জায়গায় তল্লাশি চালায় বলে সিবিআই সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, গত শনিবার থেকে রাজীব কুমার নিরুদ্দেশ। আড়াল থেকেই তিনি বারাসতের এমপি-এমএলএ কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করলেও তা ব্যর্থ হয়। এরপর বারাসত জেলা আদালতে আবেদন জানিয়ে খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি তার আইনজীবীরা। মূল মামলা যেখানে রয়েছে অর্থাৎ আলিপুর আদালতে আবেদন করতে বলেন বিচারক। ইতিমধ্যেই বারাসত আদালত থেকে মামলার নথিপত্র (কেস রেকর্ড) আলিপুর আদালতে পৌছে গিয়েছে। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জামিন অযােগ্য গ্রেফতারি পরােয়ানা জারির আবেদন কর হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর।