নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা আগেই শেষ শিয়ালদহের প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ

পরিষেবা স্বাভাবিক হতে লাগবে আরও কিছুটা সময়

নিজস্ব প্রতিনিধি, ৯ জুন– শিয়ালদা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ শেষ। চালু হল মেন সেকশনের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন পরিষেবা। অবশ্য পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলেই মনে করছে রেল।

রবিবার নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা আগেই সম্প্রসারণের কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি, পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের। ফলে, আগেভাগেই শিয়ালদার ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন পরিষেবা চালু করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ।


এদিন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘আজ বেলা ১২টা থেকে শিয়ালদা মেন সেকশনের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে লোকাল ট্রেন পরিচালনা শুরু হয়েছে। তবে লোকাল ট্রেন পরিচালনা শুরু হলেও কোনও কোনও ট্রেন কিছুটা দেরিতে চলতে পারে। আমরা আশা করছি যে, খুব শীঘ্রই আমরা যাত্রী পরিষেবা একেবারে স্বাভাবিক করে তুলতে পারব।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে রবিবার বেলা পর্যন্ত যে কর্মযজ্ঞ চলেছে, তাতে আরও আধুনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে লোকাল ট্রেন চালানো যাবে। তাতে সুরক্ষা এবং ট্রেনের গতি আরও বাড়বে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দাবি করেছেন, আরও দ্রুত এবং ভালো পরিষেবা মিলবে।

সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে করছে, সম্প্রসারণে নয়া যে সিস্টেম বসানো হয়েছে, সেটার সঙ্গে ট্রেনগুলো ধাতস্থ হয়ে গেলেই, শিয়ালদা মেন লাইন এবং শিয়ালদা উত্তর শাখায় পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই শিয়ালদা মেন লাইন এবং উত্তর শাখায় ট্রেন পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগতে পারে বলেই জানিয়েছে রেল। অবশ্য রেলের আরেকটি সূত্র জানাচ্ছে, ১০ জুন, সোমবার থেকে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে যে ট্রেনের যা সময় ছিল, সেই অনুযায়ী চলবে।

উল্লেখ্য, এতদিন শিয়ালদার ১ নম্বর থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের যা দৈর্ঘ্য ছিল, তাতে ১২ কোচের লোকাল ট্রেন চলানো যাচ্ছিল না। শিয়ালদা মেন লাইন এবং উত্তর শাখায় ১২ কোচের লোকাল ট্রেন চালু করার জন্য ওই পাঁচটি প্ল্যাটফর্মে সম্প্রসারণের পথে হাঁটে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সেই কাজ শুরু হয়। তার জেরে শুক্র এবং শনি এই দুই দিন চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন নিত্য যাত্রীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, যতগুলি ট্রেন বাতিল করার কথা বলা হয়েছিল, তার থেকে বেশি সংখ্যক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। ফলে, যে ট্রেনগুলি চলছিল, সেগুলিও অস্বাভাবিক দেরিতে চলেছে। সে কারণে অসম্ভব ভিড় উপচে পড়ে ট্রেনগুলোতে। একে তো প্রচণ্ড গরম। তার উপর ট্রেনের কামরায় গাদাগাদি ভিড়। তিল ধারণের জায়গা নেই। সবথেকে সমস্যায় পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। সব মিলিয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শিয়ালদায়। শুক্রবার ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুও হয় এক যুবকের। যদিও রেলের পক্ষ থেকে বলা হয়, যাত্রীদের তো ঝুলে যেতে বারণ করা হয়।

ওদিকে ট্রেন যাত্রীদের পালটা দাবি, পেটের টানেই কলকাতা আসেন তাঁরা। মূলত একটা ভিড় ট্রেন ছাড়লে, পরের ট্রেনের জন্য আবার ১ ঘণ্টার অপেক্ষা করতে হয়। সেকারণে ট্রেন মিস করতে চান না-কেউই। সেজন্য এই ভিড় ঠেলে উঠতে হয় ট্রেনে। সেক্ষেত্রে কষ্ট হলেও কিছু করার থাকে না।

প্রসঙ্গত, সকালের ট্রেনগুলোতে অধিকাংশ কলকাতাগামী মানুষের ভিড়ে ঠাসা থাকে। ভোর থেকে ভিড় শুরু হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৮টা-৯টা পর্যন্ত সেই ভিড়টা থাকে। বিভিন্ন অফিসের কর্মীরা, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ীরা দলে দলে ট্রেনে চেপে কলকাতায় আসার চেষ্টা করেন। বাসের যোগাযোগ সেভাবে না-থাকার জন্য বেশিরভাগ মানুষের ট্রেনই একমাত্র ভরসা।