আজ সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণা

আরজি কর কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়। ফাইল চিত্র।

আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসকের খুন–ধর্ষণের ঘটনায় শনিবারই অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিল শিয়ালদহের অতিরিক্ত দায়রা আদালত। আজ সোমবার তাঁর শাস্তি ঘোষণা করা হবে। এই শাস্তির অপেক্ষায় নির্যাতিতার পরিবার সহ গোটা দেশবাসী। সঞ্জয়কে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার দাবি উঠেছে।
৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যালের মর্মান্তিক সেই ঘটনায় অবশেষে সাজা হতে চলেছে অভিযুক্তের। আজ বেলা ১২টা নাগাদ এজলাস বসার কথা আছে। এদিন সঞ্জয়, তাঁর আইনজীবী এবং নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য শুনবেন বিচারক অনির্বাণ দাস। এরপর দুপুরের দিকে সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা করা হবে। বিচারক শনিবারই সঞ্জয়কে জানিয়ে দেন, তাঁর অপরাধ প্রমাণিত। সাক্ষীদের বয়ান ও সিবিআইয়ের তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।  তিনিই হাসপাতালে ঢুকে মহিলা চিকিৎসককে আক্রমণ করেন, তাঁকে যৌন হেনস্থা করেন এবং গলা টিপে খুন করেন।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছিল। এই ধারাগুলিতেই চার্জ গঠনও করা হয়। বিচারক ওই সমস্ত ধারা উল্লেখ করে তাতে সম্ভাব্য কী কী শাস্তি হতে পারে, তা সঞ্জয়কে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৬৪ নম্বর ধারায় ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ ১০ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। খুনের ঘটনায় ২৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। যেভাবে সঞ্জয় গলা টিপে হত্যা করেছেন, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে তাঁর। শনিবারই এবিষয়ে সঞ্জয়কে আভাস দিয়ে রেখেছেন বিচারক।
যদিও আজ সঞ্জয়ের যে সাজাই হোক না কেন তিনি নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যেতে পারবেন। প্রথমে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে সঞ্জয়কে আবেদন করতে হবে। সেই নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকলে তিনি যেতে পারে ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেও রায় বহাল থাকলে মামলা করা যাবে সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টও যদি নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে তাহলে সঞ্জয়ের শেষ ভরসা রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষা চাইতে পারেন তিনি। যদিও রাষ্ট্রপতি তাঁকে ক্ষমা না করলে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায়ই বলবৎ থাকবে।
সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও আরজি কর মামলা চলবে।  এই মামলায় তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। চার্জশিট জমা দিতে না পারায় আরজি কর মামলায় তাঁরা দুইজনেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। হাসপাতালের আর্থিক তছরুপের মামলায় সন্দীপ ঘোষ এখনও জেলে রয়েছেন। তাই ধর্ষণ–খুন মামলায় জামিন মিললেও তিনি এখনও জেলবন্দি। অপরদিকে অভিজিৎ জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন। সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণার পর মামলার বাকি দিকগুলি নিয়ে এগোবে সিবিআই।