• facebook
  • twitter
Monday, 14 April, 2025

১৫০ কোটির সদর দপ্তর নির্মাণ আরএসএস-এর

দক্ষিণবঙ্গে দ্বিগুণ শক্তিবৃদ্ধির নির্দেশ মোহন ভাগবতের

ফাইল চিত্র

মুঘলরা একসময় সারা ভারতে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল। ব্রিটিশরাও সারা ভারতে উপনিবেশ স্থাপন কে প্রায় দুই শত বছর তাঁদের শাসন কায়েম রেখেছিল। এবার কি সেই চেষ্টা চালিয়ে যাবে আরএসএস আর বিজেপি! সম্প্রতি সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতের বঙ্গে আগমন ও দীর্ঘ সফরকালের বিভিন্ন কার্যক্রম সেই প্রশ্নই বার বার উসকে দিচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

বঙ্গে এসে সরসঙ্ঘ চালক বার্তা দিয়েছেন সামাজিক কর্মসূচির মোড়কে। কিন্তু সে বার্তা ‘ডি-কোড’ করলে এ কথা অস্পষ্ট নয় যে, বঙ্গবিজয়ই লক্ষ্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের। কারণ এই আরএসএস-এর রাজনৈতিক মঞ্চ বিজেপি পূর্ব ভারতের এক ‘পৌরাণিক’ ভৌগোলিক বিন্যাস ধরে এগোতে চাইছে। দক্ষিণবঙ্গ সঙ্ঘ পরিবারকে মোহন ভাগবৎ যা বলেছেন, তাতে স্পষ্ট সেই পৌরাণিক পূর্ব ভারতে পুরো যাত্রাপথ মসৃণ করে তোলার স্পষ্ট নির্দেশ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও সঙ্ঘের কোনও মুখপাত্রই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না। কিন্তু সঙ্ঘের প্রান্ত কার্যকারিণীকে (প্রাদেশিক কর্মসমিতি) ভাগবৎ যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে বিধানসভা নির্বাচনের এক বছর আগে তাঁর বেনজির দীর্ঘ বঙ্গসফরের মূল কারণ অনেকটাই স্পষ্ট। পৌরাণিক পূর্ব ভারত বলতে অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গকে বোঝানো হচ্ছে। অঙ্গ এবং কলিঙ্গ যদি জেতা যায়, তা হলে বঙ্গবিজয়ও সম্ভব— এই তত্ত্ব সামনে রেখে কর্মীদের মনোবল বাড়াতে চাইছে বিজেপি। তাদের সেই কাজ সহজ করতে আগামী এক বছর দক্ষিণবঙ্গে আরএসএস-এর ‘সক্রিয়তা’ দ্বিগুণ হবে বলে সঙ্ঘ সূত্রেই দাবি করা হয়েছে।

গত ৬ তারিখ তিনি রাজ্যে আসার পর প্রতিদিন একের পর এক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে। ১১ এবং ১২ তারিখ সঙ্ঘের সর্বোচ্চ কমিটির (অখিল ভারতীয় টোলি) বৈঠকও কলকাতায় বসেই করেছেন। আর বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যখন পৌঁছচ্ছেন বর্ধমানে। তারই মধ্যে আরএসএস নিয়ে আরও একটি খবর সংবাদ শিরোনামে এসেছে। দিল্লির ঝান্ডেনওয়ালে আরএসএস-এর সদর দপ্তর কেশবকুঞ্জে গড়ে তোলা হয়েছে পাঁচ লক্ষ বর্গফুট জায়গাতে গড়ে তোলা হয়েছে তিনটি প্রাসাদোপম বাড়ি। ১২তলা উঁচু বিশিষ্ট এই বাড়ি তিনটির নাম যথাক্রমে– সাধনা, প্রেরণা, অর্চনা। যার নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা।

তবে এই ভবনের উদ্বোধন কবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহলের অন্ত নেই। আরএসএস-এর তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শিবাজি জয়ন্তীতে নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আরএসএস প্রধান (সরসঙ্ঘচালক) মোহন ভাগবত এবং সাধারণ সম্পাদক (সরকার্যবাহ) দত্তাত্রেয় হোসাবোলের হাতে।

কিন্তু এত বড় বড় তিনটি প্রাসাদ নির্মাণ কিসের জন্য? এ বিষয়ে জানা গিয়েছে, ভারতীয় ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক ধারা মেনে নির্মিত এই দপ্তরে সঙ্ঘের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে। আয়োজন করা হবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নানা আলোচনাসভা ও কর্মশালার। রয়েছে ৬০০ আসনের একটি পৃথক প্রেক্ষাগৃহ। তিনটি ভবনে সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখার দফতর এবং স্বয়ংসেবক ও প্রচারকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে, হাসপাতাল, দাতব্য চিকিৎসালয় এবং পাঠাগারও। সব মিলিয়ে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদরকেও ছাপিয়ে গিয়েছে আরএসএসের কেশবকুঞ্জ।