নিজস্ব প্রতিনিধি— এবার তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে বিজেপিকে ‘ওপেন চ্যালেঞ্জ’ করলেন মন্ত্রী শশী পাঁজা৷ বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় এবং মন্ত্রী শশী পাঁজা৷ এই সাংবাদিক বৈঠক থেকেই তারা বিজেপি নেতৃত্বদের মনে করিয়ে দেন অভিষেক কর্তৃক প্রদত্ত চ্যালেঞ্জের কথা৷ মোদী গ্যারান্টিকে ‘ফ্লপ গ্যারান্টি’ বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন ঋতব্রত ও শশী পাঁজা৷
‘মোদি গ্যারান্টি হল জিরো গ্যারান্টি’ এমনটাই দাবি শশী পাঁজার৷ কেবল এমন মন্তব্য করেই চুপ হয়ে যাননি, তার ব্যাখাও দিয়েছেন প্রমাণস্বরূপ পাশাপাশি উল্লেখ করেছেন পরিসংখ্যানগত তথ্য৷ তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৪৫ শতাংশ৷ তাছাড়াও রয়েছে শিক্ষিত বেকার৷ প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট সিটি মিশন’-এর আওতায় থাকা শহরগুলিকেও মোদি সরকারের তরফ থেকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি৷ প্রধানমন্ত্রীর ‘নমামি গঙ্গা’ মিশন যে অসফল তার উল্লেখযোগ্য প্রমাণ হল তাঁরই লোকসভা কেন্দ্র বারাণসী, যেখানে গঙ্গা দূষণের পরিমাণ সর্বাধিক৷ প্রধানমন্ত্রীর নোটবন্দির মাধ্যমে যে কালোধন আটক করার প্রচেষ্টা, সেখানেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন৷
নির্বাচনের নির্ঘন্ট প্রকাশ হয়ে গেছে দিনকয়েক আগেই৷ এখনও পর্যন্ত বিজেপি, সিপিএম সহ রাজ্যের বিরোধী দলগুলির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না করা নিয়েও সরব শশী পাঁজা ও ঋতব্রত ব্যানার্জী৷ ‘মনোবল ভেঙে গেছে বিজেপি প্রার্থীদের’ বলে কটাক্ষের সুর চড়ালেন৷ কোথায় বিজেপির দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তাঁরা গেরুয়া শিবিরের দিকে৷ নির্বাচনের প্রাক্কালে একাধিক জায়গায় হিংসার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া নিয়ে পদ্মশিবিরকে আক্রমণ শশী পাঁজার৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এমন একটি দল এই হিংসার পরিস্থিতি সৃষ্টি করার নেপথ্যে রয়েছে যারা এখনো সম্পূর্ণ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারেনি৷ ঘোষিত প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই অপরাধী, তাই কোচবিহারের দিনহাটার মতো হিংসার ঘটনা ঘটে৷’
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কমপক্ষে ২৫টি আসনে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হবেন এবং বিজেপি বাংলার সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে৷ এ প্রসঙ্গে ঋতব্রত কটাক্ষের সুর চড়িয়ে বলেন, ‘২ এবং ৫ সবসময় ২৫ হয়না, ৭ ও হয়৷’ পাশাপাশি সুকান্ত মজুমদারকে নিশানা করে শশী পাঁজা বলেন, ‘এখন উনি একজন প্রার্থী, জমিদারি আচরণ না করে নিজের কাজ করুক৷ তাঁর এমসিসি বা মরাল কোড অফ কন্ডাক্ট মনে রাখা উচিত৷’ এমনকি তিনি এও বলেন, ইডি সিবিআই নির্বাচন কমিশন সকল কিছুকেই বিজেপি নিজের চাকর মনে করে আর এটিই তাদের জমিদারি আচরণ৷ ইডি, সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি নিজের বিরোধী দলগুলিকে হেনস্থা করে চলেছে এ নতুন বিষয় নয়৷ এ প্রসঙ্গে ঋতব্রত বলেন, ‘এই সংস্থাগুলির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ সমস্ত কেসের পরিমান ৯৭ শতাংশ হলে কনভিকশন রেট ০.০১ শতাংশ৷’
সিএএ প্রসঙ্গে শশী পাঁজার ফের আক্রমণ বিজেপিকে৷ সম্প্রতি অমিত শা বলেন, সিএএ এবং এনআরসির কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই৷ তৃণমূল অযথা এর বিরোধিতা করছে৷ শশী পাঁজা এর জবাব দিয়ে বলেন, ‘অমিত শা নিজেই বলেছিলেন সিএএ হলে তারপর এনআরসি হবে৷’ পাশাপাশি সিএএ নিয়ে তথাগত রায়ের বিতর্কিত মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দেন৷ শান্তনু ঠাকুর এবং অসীম সরকারের পারস্পরিক বক্তব্যকে ‘বিজেপি কমেডি সার্কাস’ বলে কটাক্ষ করেন৷