• facebook
  • twitter
Friday, 27 December, 2024

আরজি কর কাণ্ড একজনের পক্ষেও ঘটানো সম্ভব

বিশেষজ্ঞ দলের রিপোর্ট

আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর প্রথম থেকেই অনেকে দাবি করছিলেন, একার পক্ষে এইভাবে ধর্ষণ–খুন করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই দাবি খারিজ করল দিল্লির বিশেষজ্ঞ দল। এই দলের দাবি, একজনের পক্ষেও এই কাণ্ড ঘটানো সম্ভব। এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সিবিআইকে দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের এই দল।

নির্যাতিতার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পরীক্ষা করে এই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ দল জানিয়েছে, ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদনের সঙ্গে ঘটনার তথ্যপ্রমাণ মিলিয়ে দেখে এই রিপোর্ট সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হওয়া যাবে।

দিল্লি এইমসের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ আদর্শ কুমারের নেতৃত্বাধীন ১১ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল ‘মাল্টি ইনস্টিটিউশনাল মেডিক্যাল বোর্ড’ (এমআইএমবি) আরজি করে নির্যাতিতার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি, সুরতহালের রিপোর্ট এবং এই সংক্রান্ত অন্য প্রয়োজনীয় রিপোর্টগুলি খতিয়ে দেখে। এই সব রিপোর্টের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দলকে মোট ৯টি প্রশ্ন করেছিল। সেই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই রিপোর্টের তিন নম্বর প্রশ্নের উত্তরে লেখা হয়েছে, আরজি করের ঘটনা যে একজনের পক্ষেও ঘটানো সম্ভব। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। পরে সিবিআইয়ের হাতে মামলা যাওয়ার পর এই ঘটনায় হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু চার্জশিট পেশ করতে না পারায় এই মামলায় সন্দীপ ও অভিজিৎ দুই জনই জামিন পান। তবে অভিজিৎ জেল থেকে মুক্ত হলেও অন্য মামলায় জড়িত থাকায় সন্দীপ এখনও জেলেই রয়েছেন।

রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্যাতিতার শরীরের কামড়ের চিহ্ন থেকে যে লালার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তা ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের লালার সঙ্গে মিলে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, শ্বাসরোধ করেই ওই তরুণীকে খুন করা হয়েছে। পাশাপাশি এই কাণ্ডে ধর্ষণের একাধিক প্রমাণ মিলেছে। তাঁর হাইমেন ছেঁড়া ছিল। সেখান থেকে রক্ত পড়ছিল। শ্বাসরোধের কারণে তাঁর চোখ বিস্ফারিত হয়ে গিয়েছিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। মৃত্যুর আগে তিনি ছটফট করছিলেন বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়। যোনিতে বলপ্রয়োগের ইঙ্গিত মিলেছে। অর্থাৎ জোর করে ভোঁতা কিছু প্রবেশ করানোর চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু বীর্য পাওয়া যায়নি। নির্যাতিতা একাধিকবার প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। বিশেষজ্ঞরা রিপোর্টে আরও দাবি করেন, ময়নাতন্তের সময় কিছু নিয়মভঙ্গ করা হয়েছিল।