আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নার্কো টেস্ট করানোর জন্য আদালতে আবেদন জানাবে সিবিআই। ৩০ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি স্পেশাল আদালত সেই আবেদন শুনবে। সম্প্রতি আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের মামলায় সন্দীপকে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এর আগে হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের মামলাতেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
পাশাপাশি ওই বিশেষ আদালতে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের পলিগ্রাফ টেস্ট করার জন্যও আবেদন জানাবে সিবিআই। আরজি করে ধর্ষণ–খুনের মামলায় অভিজিৎকেও গ্রেপ্তার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা। তাঁরা দুজনের বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর সন্দীপ ও অভিজিৎকে বিশেষ আদালতে হাজির করা হবে। এর আগে এই মামলায় সন্দীপ ঘোষের পলিগ্রাফ টেস্ট করিয়েছিল সিবিআই। বর্তমানে তদন্তকারী সংস্থা তাঁর নার্কো টেস্ট করানোর আবেদন জানাবে। এই দুটি টেস্টের তথ্য মিলিয়ে দেখতে চাইছে সিবিআই।
কোনও ব্যক্তি মিথ্যা বলছে কি না তা জানার জন্য পলিগ্রাফ টেস্ট করা হয়। পলিগ্রাফ একটি মেশিন। সেখানে সেন্সর থেকে একাধিক সংকেত কাগজের স্ট্রিপে রেকর্ড করা হয়। কোনও ব্যক্তিকে প্রশ্ন করার সময় শ্বাসের হার, শ্বাস–প্রশ্বাসের পরিবর্তন, রক্তচাপ এবং ঘামের পরিমাণ পরীক্ষা করে দেখা হয়। তবে নার্কো টেস্টের ক্ষেত্রে অন্যরকমভাবে পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তিকে প্রশ্ন করার আগে তাঁর শরীরে সোডিয়াম পেন্টোথাল প্রয়োগ করা হয়। এই ড্রাগকে অনেকে আবার ‘ট্রুথ ড্রাগ’ বা ‘ট্রুথ সেরাম’ নামেও ডাকে। এই ড্রাগ কোনও ব্যক্তির শরীরে ব্যবহার করলে তিনি সম্পূর্ণরূপে সচেতন থাকতে পারেন না। এই রকম শারীরিক পরিস্থিতিতে সেই ব্যক্তি শুধুমাত্র সত্যি কথাই বলেন বলে দাবি করা হয়। দুটি টেস্টের মধ্যে কোনওটিই অভিযুক্ত ব্যক্তির সম্মতি ছাড়া করা যায় না।
উল্লেখ্য, আরজি কর মেডিক্যালে ধর্ষণ–খুনের মামলায় সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত বিভ্রান্ত করা সহ প্রমাণ নষ্ট করার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার শেষ শুনানিতে সন্দীপ ও অভিজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর বলে দাবি করে তাঁদের জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন বিচারক। পাশাপাশি বিচারকের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।