বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট চাইল সিবিআই

বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট তলব করল সিবিআই। রাজ্যের সবকটি সরকারি হাসপাতালের বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য সংক্রান্ত নথি চাওয়া হয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতালে কীভাবে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশন করা হয় সেবিষয়ে জানতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আর্থিক অনিয়মের মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলীর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি। আখতার আলী দাবি করেছিলেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য পাচার করে কয়েক কোটি টাকার কেলেঙ্কারি হয়েছে।

কেন্দ্রীয় সংস্থা রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে জানতে চেয়েছে, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য সংক্রান্ত কেন্দ্রের নির্দেশিকা কবে থেকে রাজ্যে কার্যকর হয়েছে? কেন্দ্রের ২০২১ সালের নির্দেশিকা কার্যকর হতে দেরি হলে তা কেন হয়েছে সে বিষয়েও জানতে চেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা। পাশাপাশি বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য নির্ধারিত নিয়মগুলি মেনে চলার ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলির উপর স্বাস্থ্য দপ্তর নজর দিয়েছে কি না সেবিষয়ও জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে গুরুতর অনিয়মের ইঙ্গিত পেয়েছে সিবিআই।


নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেকটি হাসপাতালে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিষ্কাশন করা হয়, যাতে সেগুলি পুনর্ব্যবহারের কোনও সম্ভাবনা না থাকে। যদিও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এই নিয়ম মানা হত না বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্টে স্যালাইন বোতল, ইনজেকশন সিরিঞ্জ, সূঁচ সহ আরও অনেক পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিসই নিষ্কাশন না করে বাজারে বিক্রি করা হত।

উল্লেখ্য, একটি নির্দিষ্ট সময়কালে কত পরিমাণ বর্জ্য নিষ্কাশন করা হচ্ছে তার তথ্য প্রতিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেই থাকার কথা। লক্ষ্য করা গিয়েছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আরজি কর কর্তৃপক্ষ যে পরিমাণ বায়োমেডিকাল বর্জ্য নিষ্কাশন করেছে, রাজ্যের অন্য মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ওই একই সময়ে বর্জ্য নিষ্কাশনের পরিমাণ তার তুলনায় বেশি । আখতার আলি দাবি করেছিলেন, এনআরএস-আরজি করে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য উৎপাদনে একই ক্ষমতা। তবুও সেপ্টেম্বর ২০২২-ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালের মধ্যে এনআরএসে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্যর পরিমাণ ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৬৫০ কেজি। সেখানে আরজি করে একই সময়ে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্যর মাত্রা সেখানে ৪৯ হাজার ৬০২.৪৪ কেজি। এসব অসঙ্গতি সামনে আসার পরই এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেতে চাইছে সিবিআই।

সূত্রের খবর, এই ঘটনায় বাংলাদেশের দুই ব্যক্তির খোঁজ পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা। তাঁরা নিয়মিত কলকাতায় আসতেন। তাঁরা দুজনেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন বলে জেনেছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, এই দুই ব্যক্তি মেডিক্যাল সরঞ্জাম কেনা বেচার ব্যবসা করতেন তাঁরা সেই সমস্ত সরঞ্জাম সংগ্রহ করে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বিক্রি করতেন।