আরজি কর কাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের ‘হাতিয়ার’ হার্ড ডিস্ক

আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফাইল চিত্র

আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার জট এখনও খোলেনি। তথ্য ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ সামনে আসতেই সিবিআই মনে করছে, ইতিমধ্যেই অনেক তথ্য তাদের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও একাধিক হার্ড ডিস্ক রয়েছে, যা আরজি মামলায় ট্রাম্প কার্ড হতে পারে বলে মনে করছে সিবিআই।

জানা যাচ্ছে, ওই হার্ড ডিস্কের মধ্যেই কয়েকটি বিশেষ ফাইলে একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। সেই ফুটেজ থেকে মিলতে পারে অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর। কারণ ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতাল ও টালা থানার কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে সন্দেহ ছিল সিবিআইয়ের। সুপ্রিম কোর্টেও এই বিষয়টির উপর আলোকপাত করা হয়। কারণ এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের হাতে সব ফুটেজ এসে পৌঁছয়নি। যেগুলি এসেছে, তার মধ্যে অধিকাংশটাই অসমাপ্ত। এর পরই হাসপাতাল এবং টালা থানার বেশ কয়েকটি কম্পিউটার খতিয়ে দেখেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সেখান থেকেই উদ্ধার হয় বেশ কিছু হার্ড ডিস্ক। সেই হার্ড ডিস্কেই কিছু সিসিটিভি ফুটেজ ছিল বলে দাবি করে সিবিআই। আপাতত সেই ফুটেজগুলিই সিবিআইয়ের হাতিয়ার।

আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তথ্য -প্রমাণ লোপাট এবং ষড়যন্ত্রের মামলায় ইতিমধ্যেই সন্দীপ ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। গ্রেপ্তার হয়েছেন টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলও। এই মামলায় চার্জশিট পেশের আগে আপাতত হার্ড ডিস্কে থাকা ফুটেজগুলির উপরই গুরুত্ব দিচ্ছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই আদালতের অনুমতি নিয়েই ওই হার্ড ডিস্কগুলি কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যা বরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই হার্ড ডিস্কের তথ্য সিবিআইয়ের হাতে আসতে পারে বলে জানা গিয়েছে।


সিবিআই সূত্রে খবর, তারা ৪টি কম্পিউটার থেকে ৪টি হার্ড ডিস্ক সংগ্রহ করে। এরপর তা ফরেনসিকে পরীক্ষার জন্য পাঠাতে চেয়ে শিয়ালদহ আদালতে আবেদন করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আবেদন মঞ্জুর হয়। তবে এখনও হার্ড ডিস্কের বিষয়ে রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি। পরবর্তী চার্জশিটে ওই রিপোর্টটি নথিভুক্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে সিবিআই।

প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালের ৫১টি সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। সেই ফুটেজ থেকেই ধৃত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধি নজরে আসে। সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে ইতিমধ্যেই সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছে সিবিআই। কিন্তু সন্দীপ রায় বা অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে ওঠা তথ্য লোপাটের কোনও প্রমাণ সিবিআইয়ের হাতে নেই। বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ মুছে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল সন্দীপ-অভিজিতের বিরুদ্ধে। সেই ফুটেজগুলিই এবার ফিরিয়ে আনতে মরিয়া সিবিআই।